ঢাকা, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২

নজিরবিহীন খরার কবলে তেহরান, ঝুঁকিতে লাখ লাখ মানুষ

২০২৫ নভেম্বর ১০ ১২:৫৬:২৪

নজিরবিহীন খরার কবলে তেহরান, ঝুঁকিতে লাখ লাখ মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরান দীর্ঘদিনের নজিরবিহীন খরার কবলে পড়েছে, যার প্রভাব সবচেয়ে তীব্র রাজধানী তেহরানে পড়েছে। শহরের পানি সংকট এতটাই ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে বলেছেন, প্রয়োজন হলে তেহরানকে খালি করাও হতে পারে।

পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, যদি আগামী সময় বৃষ্টি না হয়, তবে রাজধানীতে পানির রেশনিং কার্যকর করতে হতে পারে। কিন্তু রেশনিংও যথেষ্ট না হলে শহর খালি করার বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। তাঁর এই মন্তব্যে ইরানের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা দেখা দিয়েছে। তেহরানের সাবেক মেয়র গোলামহোসেন কারবাসচি মন্তব্য করেছেন, বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি হাস্যকর।

তেহরানের প্রধান জলাধার লাতিয়ান বাঁধে এখন মাত্র ১০ শতাংশেরও কম পানি রয়েছে। কারাজ বাঁধের রিজার্ভারেও মাত্র আট শতাংশ পানি আছে, যার বড় অংশ ‘ডেড ওয়াটার’—অর্থাৎ ব্যবহার অনুপযোগী। বাঁধের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ-আলি মোয়াল্লেম জানান, গত বছরের তুলনায় বৃষ্টিপাত ৯২ শতাংশ কমেছে। পানির তীব্র সংকটের কারণে রাতের সময় সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে এবং অতিরিক্ত ব্যবহারকারীদের জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছেন ইরানের জ্বালানি মন্ত্রী আব্বাস আলি আবাদি।

শহরের বাইরেও পরিস্থিতি সমান গুরুতর। পশ্চিম ও পূর্ব আজারবাইজান, মারকাজি প্রদেশসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদে বাঁধগুলোর পানি মাত্র আট শতাংশের কম। স্থানীয় পানি করপোরেশনের প্রধান হোসেইন ইসমাইলিয়ান জানিয়েছেন, প্রধান চারটি জলাধারের মধ্যে কার্যত কেবল দোস্তি বাঁধে কিছু পানি রয়ে গেছে, বাকিগুলো প্রায় বন্ধ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের পানিসংকট বহু দশকের পুরোনো সমস্যা। আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিও ২০১১ সাল থেকে সতর্ক করে আসছেন। কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে তেহরান, কারাজ ও মাশহাদের ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ কলের পানি ফুরিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত