ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

ট্রাম্পের শুল্কে ধ্বংসের মুখে এক দেশের পোশাকশিল্প

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৮:০৫:৫০
ট্রাম্পের শুল্কে ধ্বংসের মুখে এক দেশের পোশাকশিল্প

আফ্রিকার শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক দেশ লেসোথোর রপ্তানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে লেসোথোর গোটা পোশাকশিল্প খাত ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী মোখেথি শেলিলে। এতে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ চাকরি হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী শেলিলে জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে ‘জাতীয় দুর্যোগ অবস্থা’ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি আগামী দুই বছরের মধ্যে বিকল্প খাতে দ্রুত ৬০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

লেসেথোর বাণিজ্যমন্ত্রী শেলিলে বলেন, "আমরা এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যুক্তরাষ্ট্র যেন আমাদের জন্য একটি সহনীয় শুল্কহার নির্ধারণ করে। এই হার অবশ্যই ১০ শতাংশের নিচে হতে হবে। এর বেশি হলে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রমুখী গার্মেন্টস রপ্তানি হয় অন্য বাজারে যেতে বাধ্য হবে, না হয় বন্ধ হয়ে যাবে।"

দক্ষিণ আফ্রিকার পাহাড়বেষ্টিত ক্ষুদ্র রাষ্ট্র লেসোথো (জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ) গত ২৫ বছর ধরে ‘আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্ট’ (AGOA)-এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্তভাবে পোশাক রপ্তানি করে আসছিল। এই সুযোগের ফলে দেশটি লেভিস, র‍্যাঙ্গলারসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পোশাক সরবরাহকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

তবে চলতি বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন লেসোথোর রপ্তানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেয়। এটি যে কোনো দেশের ওপর আরোপযোগ্য সর্বোচ্চ শুল্কের একটি বলে মনে করা হচ্ছে।

লেসোথোর রপ্তানিনির্ভর পোশাক খাত দেশটির সবচেয়ে বড় বেসরকারি নিয়োগখাত। সেখানে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ কাজ করতেন। তবে শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকেই শত শত শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। একই সঙ্গে ইউএসএআইডির তহবিল হ্রাসের কারণে আরও অনেক কর্মী বেসরকারি খাত থেকেও কর্মচ্যুত হয়েছেন।

দেশটির মোট ২ বিলিয়ন ডলারের জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশই পোশাক রপ্তানি থেকে আসে। তবে এই খাত মূলত ক্ষীণ মুনাফায় চলে, তাই সামান্য কোনো ধাক্কাতেই অনেক কারখানা ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।

দেশটির অন্যতম বৃহৎ পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আফ্রি এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা তেবোহো কোবেলি বলেন, "যেসব কারখানা যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোনো দেশে পোশাক রপ্তানি করছে না, তারা একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যারা কিছুটা সৌভাগ্যবান, তারা এখন শুধু আগের প্রক্রিয়াধীন অর্ডার শেষ করছে। তবে নতুন কোনো অর্ডার আসছে না।"

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত