ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

ভারত-মিয়ানমার কালাদান বন্দর চালু কবে?

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুলাই ০৮ ১৭:১৯:১৫
ভারত-মিয়ানমার কালাদান বন্দর চালু কবে?

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মিয়ানমারের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে নেওয়া কৌশলগত ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প’ ২০২৭ সালের মধ্যে পুরোপুরি চালু হবে বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।

সোমবার আসামের গৌহাটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভারতরে এই মন্ত্রী বলেন, “উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে জলপথ ও সমুদ্রপথের মাধ্যমে যুক্ত করতে সরকার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই খাতে দক্ষ জনশক্তি গড়তে ওই অঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার যুবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প ভারতের “ইন্ডিয়া-মিয়ানমার ফ্রেন্ডশিপ ট্রিটির” ফসল। এটি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ, যার মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মিয়ানমারের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো হবে। এই প্রকল্প ২০২৭ সালের মধ্যে পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।”

নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে সোনোয়াল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে উত্তর-পূর্ব ভারত এখন ভারত নির্মাণ পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে। মোদির রূপান্তরমূলক অ্যাক্ট ইস্ট নীতির ফলে একসময় অবরুদ্ধ এই অঞ্চল এখন আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে সরাসরি ও সংক্ষিপ্ত প্রবেশাধিকার পেতে চলেছে। মিয়ানমারে সিতওয়ে বন্দর দ্রুত নির্মিত হয়েছে, যা এই অঙ্গীকারের বড় প্রমাণ। পুরোপুরি চালু হলে এই অঞ্চল শুধু উত্তর-পূর্ব ভারত নয়, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারকেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করে নতুন বাণিজ্য সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।”

মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দর অভ্যন্তরীণ জলপথে পালেতওয়ার সঙ্গে সংযুক্ত এবং সেখান থেকে জোরিনপুই পর্যন্ত একটি সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সিতওয়ে থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম পর্যন্তও যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে সাবরুম পর্যন্তও রয়েছে সড়ক সংযোগ।

ভারতের মূল ভূখণ্ডের কলকাতা থেকে নৌপথে পণ্য সিতওয়ে বা টেকনাফে এনে সেখান থেকে তা টেকনাফ হয়ে ত্রিপুরা এবং পালেতওয়া হয়ে মিজোরামে পরিবহন করা সম্ভব। সিতওয়ে বন্দর ও কালাদান প্রকল্প কার্যকর হলে ত্রিপুরা উল্লেখযোগ্যভাবে লাভবান হবে। কারণ এতে পরিবহন খরচ ও সময় উভয়ই কমবে।

সিতওয়ে বন্দরে রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, কাঠ, মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্য, পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য, তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল। আর আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে সিমেন্ট, লোহা, ইটসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী।

ভারতের জলপথ মন্ত্রী বলেন, “বন্দরের সক্ষমতা ও কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ে ঐতিহাসিক বৃদ্ধি থেকে শুরু করে পরিবেশবান্ধব শিপিং, ক্রুজ টুরিজম ও যুবসমাজের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন পর্যন্ত—এই সাফল্যগুলো প্রমাণ করে যে ভারতকে একটি বৈশ্বিক সামুদ্রিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলা এবং উপকূল ও নদীভিত্তিক অঞ্চলগুলোর সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতেই মোদি সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত