ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২

কাঁচামালের ব্যয় বৃদ্ধিতেও রঙিন থাকল বার্জারের আয়

মোবারক হোসেন
মোবারক হোসেন

রিপোর্টার

২০২৫ নভেম্বর ০১ ০০:১৩:৩০

কাঁচামালের ব্যয় বৃদ্ধিতেও রঙিন থাকল বার্জারের আয়

মোবারক হোসেন: চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড মুনাফা হ্রাসের মুখে পড়েছে। কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৭০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪৯ কোটি টাকায়, যার মূল কারণ হিসেবে মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে কাঁচামালের ব্যয় বৃদ্ধিকে দায়ী করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটি জানায়, বাজারের প্রায় ৫০ শতাংশ শেয়ার দখলকারী বার্জার পেইন্টস বছরে বিক্রিতে ৩.৫৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। তবে একই সময়ে বিক্রয় ব্যয় বেড়েছে ৫.৮৩ শতাংশ, যা দাঁড়িয়েছে ৯১৭ কোটি টাকায়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আগের বছর প্রতি ১০০ টাকার বিক্রিতে উৎপাদন ব্যয় ছিল ৬৭ টাকা ৩০ পয়সা, যা এবার বেড়ে হয়েছে ৬৮ টাকা ৭৭ পয়সা। কোম্পানির অধিকাংশ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, ফলে মুদ্রার অবমূল্যায়নে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত বছরের একই সময়ে প্রতি ১০০ টাকার বিক্রিতে কোম্পানিটি ১২ টাকার বেশি মুনাফা অর্জন করেছিল, কিন্তু এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ১০ পয়সায়।

তবে চলতি অর্থবছরে কোম্পানির অর্থায়ন ব্যয় কমেছে, যদিও বিনিয়োগ আয়ে কিছুটা হ্রাস হয়েছে। পাশাপাশি সরকার কর হার ২.২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করায় কোম্পানিটিকে বেশি কর প্রদান করতে হয়েছে।

তারপরও কোম্পানি দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২৫) মুনাফার ঊর্ধ্বগতি ধরে রেখেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ০৮ পয়সায়, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১১ টাকা ৯৬ পয়সা।

তবে অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিক বা ছয় মাসে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির মুনাফা সামান্য কমেছে। আলোচ্য দুই প্রান্তিকে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩১ টাকা ১৪ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩২ টাকা ২৮ পয়সা।

একই সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নগদ কার্যকরি প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ২৪ পয়সা, যা আগের বছর ছিল মাইনাস ২৭ টাকা ৭০ পয়সা—অর্থাৎ কোম্পানির নগদ প্রবাহে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে।

২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৫৬ টাকা ৩৩ পয়সা।

এতে দেখা যায়, দ্বিতীয় প্রান্তিকশেষে কোম্পানির মুনাফা ১১.২৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ কোটি টাকায়। ছয় মাসে বার্জারের নগদ প্রবাহ ও কার্যকরী মুনাফা উভয়ই উন্নতি পেয়েছে, যা কোম্পানির আর্থিক স্থিতি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।

২০২৪-২৫ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ৩.৭৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩৭ কোটি টাকায়। একই সময়ে কোম্পানিটি ৫২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে, যা আগের বছরের ৫০০ শতাংশের চেয়ে বেশি।

বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বার্জারের শেয়ারদর ০.১৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি শেয়ার ১ হাজার ৪২৫ টাকায় ক্লোজিং হয়েছে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত