ঢাকা, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

নেপালে সার্বিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ০০:০০:৫৭

নেপালে সার্বিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরম আকার ধারণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের ঘোষণা সত্ত্বেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দেশটির সার্বিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। স্থানীয় সময় রাত ১০টার পর সেনারা কাঠমান্ডুর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেন। এর আগে, আজ দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ওলি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু এরপর বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট, অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সহিংসতা দিনভর অব্যাহত থাকে।

সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন ত্যাগ করে সংলাপে বসার আহ্বান জানান। এক ভিডিও বার্তায় জেনারেল সিগদেল "সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা সকল নেপালিদের দায়িত্ব" বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে আন্দোলন পরিত্যাগ করা জরুরি। সেনাপ্রধানের ভাষণের পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ১০টার পর থেকে সেনাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পরও বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন মন্ত্রীর বাসভবনে হামলা চালায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা ও তার স্ত্রীকে মারধর করা হয়, এতে দেউবা গুরুতর আহত হন এবং পরে সেনাবাহিনী তাকে উদ্ধার করে। আরও মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালনাথ খানালের বাড়িতে, যেখানে বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় বাড়ির ভেতরে থাকা তার স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকর আগুনে দগ্ধ হয়ে নিহত হন। কাঠমান্ডুর পরিস্থিতি সকাল থেকেই খারাপ হতে শুরু করে এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়ে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির মধ্যে মাহোত্তারির জ্বলেশ্বর কারাগারেও নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে।

গণবিক্ষোভের সুযোগে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জ্বলেশ্বর কারাগার ভেঙে ফেলে বিক্ষোভকারী ও কয়েদিরা। সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, এই ঘটনায় অন্তত ৫৭২ জন আসামি পালিয়ে গেছে। স্থানীয় পুলিশ সুপার হেরাম্ব শর্মা জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রায় ৫০০ বিক্ষোভকারী লাঠিসোঁটা নিয়ে কারাগারে উপস্থিত হয় এবং ভাঙচুর শুরু করে। একই সময় কয়েদিরাও রান্নার কাঠ ব্যবহার করে দেয়াল ভাঙতে শুরু করে। পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। জেল ভাঙার পর সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং পুলিশ জরুরি বৈঠকে বসবে বলে জানা গেছে। সাধারণ নেপালিরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে, জেন-জির বিক্ষোভকারীরা এমন কাজ করেনি, বরং অপরাধীরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে।

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত