ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় প্রতিদিন গড়ে ২৮ শিশুর মৃত্যু: ইউনিসেফ

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ আগস্ট ০৫ ২১:৩৫:৩২
গাজায় প্রতিদিন গড়ে ২৮ শিশুর মৃত্যু: ইউনিসেফ

ইসরায়েলি নির্বিচার বোমা হামলা এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশে কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে গাজা উপত্যকা শিশুদের জন্য একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে জানিয়েছে, সেখানে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২৮টি শিশুর প্রাণহানি ঘটছে, যা একটি পূর্ণ শ্রেণিকক্ষের সমান।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ গাজার শিশুদের অবস্থাকে "বোমায় মৃত্যু, অপুষ্টি ও অনাহারে মৃত্যু, এবং সহায়তা ও জরুরি সেবার অভাবে মৃত্যু" হিসেবে বর্ণনা করেছে। সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, শিশুদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ এবং সুরক্ষার চেয়েও এই মুহূর্তে বেশি প্রয়োজন একটি যুদ্ধবিরতি।

ইসরায়েলের গণবিধ্বংসী আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬০,৯৩৩ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৮ হাজারের বেশি শিশু। যুদ্ধের শুরু থেকে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে একজন শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। অনাহার পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও আটজন ফিলিস্তিনি না খেতে পেয়ে মারা গেছেন, যাদের মধ্যে একজন শিশু। এ নিয়ে মানবিক সহায়তায় বাধার পর থেকে অনাহারে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৮, যার মধ্যে ৯৪ জনই শিশু।

হারিয়ে যাওয়া শৈশব আর মানসিক ক্ষত

যুদ্ধ শুধু প্রাণই কাড়ছে না, শিশুদের শৈশব ও মানসিক স্বাস্থ্যকেও ধ্বংস করে দিচ্ছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাস্তুচ্যুত শিশু কাদিম খুফু বাসিমের কথা। পরিবারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে সে এখন বিস্কুট বিক্রি করে। বাসিম বলে, "আমি ফুটবল খেলতে ভালোবাসি। কিন্তু এখন বিস্কুট বিক্রি করি। আমার শৈশব হারিয়ে গেছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আমাদের আর কোনও শৈশব নেই।"

যুদ্ধের মানসিক ক্ষত কতটা গভীর হতে পারে, তার উদাহরণ ১০ বছরের শিশু লানা। আশ্রয় শিবিরের কাছে বোমা বিস্ফোরণের পর সে এতটাই মানসিক আঘাত পেয়েছে যে, ট্রমা-জনিত কারণে তার চুল ও ত্বক সাদা হয়ে গেছে। তার মা জানান, লানা এখন আর মানুষের সাথে কথা বলে না, শুধু তার পুতুলকে জিজ্ঞেস করে, "তুমি কি আমার সঙ্গে খেলবে, না অন্যদের মতো আমাকে নিয়ে হাসবে?"

এই পরিস্থিতিকে বর্ণনা করতে গিয়ে সেভ দ্য চিলড্রেনের আঞ্চলিক পরিচালক আহমাদ আলহানদাভি বলেন, "গাজা এখন শিশু ও তাদের স্বপ্নের জন্য কবরস্থানে পরিণত হয়েছে। এই প্রজন্ম বড় হচ্ছে এই বিশ্বাস নিয়ে যে, বিশ্ব তাদের ত্যাগ করেছে।"

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত