ঢাকা, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুলাই ১২ ১০:৪১:২৬
পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের (এসইএআরও) পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে গতকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

সায়মা ওয়াজেদ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা। চার মাস আগে দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছিল।

জেনেভাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম হেলথ পলিসি ওয়াচ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেইসুস সংস্থার কর্মীদের পাঠানো এক অভ্যন্তরীণ ই-মেইলে জানান, সায়মা ওয়াজেদ ছুটিতে যাচ্ছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে সহকারী মহাপরিচালক ড. ক্যাথরিনা বেম ‘অফিসার ইন চার্জ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ক্যাথরিনা বেম আগামী ১৫ জুলাই নয়াদিল্লিতে এসইএআরও কার্যালয়ে যোগ দেবেন বলেও ই-মেইলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মূলত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক পদে তাঁর নিয়োগকে কেন্দ্র করে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি এ পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে তখন থেকেই অভিযোগ উঠেছিল, তাঁর মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কন্যার পক্ষে প্রভাব খাটিয়েছেন।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি তদন্ত শুরু করে। দুদকের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সায়মা ওয়াজেদ পদে প্রার্থী হওয়ার সময় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ও ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করেছেন। এতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারা (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) এবং ৪৭১ ধারা (জাল দলিল ব্যবহারের অভিযোগ) লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া সায়মা ওয়াজেদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) (বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) একটি ‘অনারারি’ পদে আছেন বলে দাবি করেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে। দুদকের অভিযোগ, এই ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করেই তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ নিশ্চিত করেন। দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম তাঁর নথিতে এসব তথ্য বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন।

তাছাড়া, সায়মা ওয়াজেদ সূচনা ফাউন্ডেশনের সাবেক প্রধান হিসেবেও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দুদকের দাবি, তিনি দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২৮ লাখ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছেন। তবে এই অর্থ কোথায় এবং কীভাবে ব্যয় হয়েছে- সে সম্পর্কে মামলার নথিতে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা ও অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পদ গ্রহণ) এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

এই মামলাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে সায়মা ওয়াজেদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। তিনি বাংলাদেশে ফিরে এলে গ্রেপ্তারের মুখোমুখি হতে পারেন বলেও জানা গেছে।

এ ছাড়া সায়মা ওয়াজেদ তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) (বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) তাঁর একটি ‘অনারারি’ পদ আছে বলে দাবি করেছিলেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটি অস্বীকার করেছে। এই ভূমিকা ব্যবহার করে তিনি ডব্লিউএইচও—এর পদ নিশ্চিত করেন বলে দুদকের অভিযোগ। দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম নথিতে এসব অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।

এ ছাড়া, সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে সূচনা ফাউন্ডেশনের সাবেক প্রধান হিসেবে নিজের ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২৮ লাখ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করার অভিযোগও আনা হয়েছে। তবে এই অর্থ কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, সে বিষয়ে দুদকের মামলায় বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা ও অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পদ গ্রহণ) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছে দুদক।

এই অভিযোগ দায়েরের পর থেকে সায়মা ওয়াজেদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোতে স্বাভাবিক যাতায়াত করতে পারছেন না। তিনি বাংলাদেশে ফিরলে গ্রেপ্তার হতে পারেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত