ঢাকা, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
শেয়ারবাজারে ব্যাংক খাতে বিক্রেতা সংকটের নতুন দিগন্ত

দেশের শেয়ারবাজারে আজ সোমবার (০৭ জুলাই) বড় উত্থান দেখা যাচ্ছে। যার মূল চালিকাশক্তি হলো ব্যাংক খাত। দিনের শেষ ভাগে বেলা পৌনে ১টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৮০ পয়েন্টের বেশি বেড়ে লেনদেন হতে দেখা গেছে। যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
এমন উত্থানের সবচেয়ে লক্ষণীয় দিক হলো ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলোতে বিক্রেতা সংকটের হিড়িক, যার ফলে অনেক কোম্পানির শেয়ার 'হল্টেড' হয়ে গেছে। রূপালী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের মতো সংকটে থাকা আলোচিত ব্যাংকগুলোর শেয়ারের বিক্রেতারাও উধাও হয়ে গেছে, যা বাজারের জন্য এক অত্যন্ত ইতিবাচক সংকেত।
এক সময় ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলোতে দিনের পর দিন ক্রেতা সংকট ছিল, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি করেছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র তুলে ধরছে। এই বিক্রেতা সংকট নির্দেশ করে, বিনিয়োগকারীরা ব্যাংক খাতের শেয়ার ধরে রাখতে আগ্রহী। কারণ তারা ভবিষ্যতে আরও ভালো পারফরম্যান্সের প্রত্যাশা করছেন। এটি কেবল একটি সাময়িক প্রবণতা নয়, বরং ব্যাংক খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসার একটি শক্তিশালী প্রমাণ।
ব্যাংক খাতের এই আকস্মিক জৌলুসের পেছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথমত, দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলো তাদের প্রকৃত মূল্যের নিচে লেনদেন হয়েছে, যা এখন বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় মূল্যায়নে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, সামগ্রিক বাজার পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি আর্থিক খাতের প্রতি সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ, যেমন বাংলাদেশ ব্যাংককে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান করার উদ্যোগ, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আস্থা ফিরিয়ে এনেছে। তারা মনে করছেন, এই পদক্ষেপগুলো ব্যাংক খাতকে আরও স্থিতিশীল এবং লাভজনক করে তুলবে। তৃতীয়ত, কিছু ব্যাংকের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ভালো ডিভিডেন্ডের প্রত্যাশাও এই খাতের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও এই সুযোগে ব্যাংক শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যখন কোনো শেয়ারে বিক্রেতা সংকট দেখা দেয়, তার মানে হলো বাজারে সেই শেয়ারের জন্য প্রচণ্ড চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সরবরাহ কম। এর ফলে শেয়ারের দাম দ্রুত বাড়তে থাকে এবং অনেক সময় সার্কিট ব্রেকারের কারণে লেনদেন বন্ধ (হল্টেড) হয়ে যায়। রূপালী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের মতো ব্যাংকগুলোর শেয়ারের বিক্রেতা উধাও হয়ে যাওয়া এই শক্তিশালী চাহিদারই প্রতিফলন। এটি কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে না, বরং পুরো ব্যাংক খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচক মনোভাবকে আরও দৃঢ় করছে।
শেয়ারবাজারে ব্যাংক খাতের একটি বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে। তাই এই খাতের উত্থান ডিএসই'র প্রধান সূচকে সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ব্যাংক খাতের এই শক্তিশালী পারফরম্যান্স সামগ্রিক বাজারের জন্য একটি আশার আলো নিয়ে এসেছে। এটি অন্যান্য খাতের বিনিয়োগকারীদেরও উৎসাহিত করবে এবং বাজারকে একটি টেকসই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় নিয়ে যেতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে তা কেবল বিনিয়োগকারীদের জন্যই নয়, দেশের অর্থনীতির জন্যও একটি শুভ লক্ষণ বয়ে আনবে।
বাজর বিশ্লেষণে দেখা যায়, এদিন বেলা পৌনে ১টায় ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ২০টি কোম্পানির মধ্যে ১০টিই ছিল ব্যাংক খাতের। ব্যাংক খাতের অন্যতম আলোচিত ন্যাশনাল ব্যাংক এবং স্যেসাল ইসলামী ব্যাংকও শীর্ষ ২০ কোম্পানির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- আট কোম্পানির উদ্যোক্তাদের নিয়ন্ত্রণে ৮০ শতাংশের বেশি শেয়ার
- ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বৃত্তি : সাক্ষাৎকার যেদিন শুরু
- শেয়ারবাজারের পাঁচ কোম্পানিতে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ
- নভেম্বর-ডিসেম্বরে হতে পারে ঢাবির ৫৪তম সমাবর্তন
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ১১০ কোটি টাকার খেলাপি গ্রাহক গ্রেপ্তার
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ১২ কোম্পানি
- ঢাবি অ্যালামনাইয়ের বৃত্তির সাক্ষাৎকার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- প্রথম প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে পাঁচ কোম্পানি
- ২১ বস্ত্র কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা নজরকাড়া তলানিতে
- ভারতের ২৫০ সেনা নিহত
- ‘শেয়ারবাজারের মাঠ খেলার জন্য পুরোদমে প্রস্তুত’
- ১৭ কোম্পানি শেয়ারে সফল বিনিয়োগ, ২০ শতাংশের বেশি মুনাফা
- হিরোশিমার চেয়ে ৬ গুণ শক্তিশালী বোমা ফেললো ইসরাইল
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
- ১৩ বীমায় প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানা তলানিতে, ১০% শতাংশের নিচে শেয়ার