ঢাকা, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

হিরোশিমার চেয়ে ৬ গুণ শক্তিশালী বোমা ফেললো ইসরাইল

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুলাই ০৪ ০৯:৩১:২৬
হিরোশিমার চেয়ে ৬ গুণ শক্তিশালী বোমা ফেললো ইসরাইল

গাজায় ইসরাইল যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিরোশিমার ওপর ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ। তিনি বলেন, গাজা ধ্বংস করতে ইসরাইল ৮৫ হাজার টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে যা হিরোশিমায় ব্যবহৃত বোমার ছয়গুণ শক্তিশালী।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে দেওয়া এক প্রতিবেদনে তিনি জানান, এই গণবিধ্বংসী কার্যক্রমে ইসরাইলকে যে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে তা অস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর রেকর্ড মুনাফার পথ তৈরি করেছে। গাজায় এই সহিংসতা আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নির্মম গণহত্যা বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আলবানিজ বলেন, তথাকথিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ আদতে একটি মৃত্যুফাঁদ—যার মাধ্যমে মানুষকে হত্যা কিংবা গাজা ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত বা আহত হলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় ১১৮ জন নিহত ও ৫৮১ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২ জন ত্রাণপ্রার্থী ছিলেন। অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৫৭ হাজার ১৩০ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ।

আলবানিজ অভিযোগ করেন, ইসরাইল এই যুদ্ধকে নতুন অস্ত্র, নজরদারি প্রযুক্তি ও ড্রোন সিস্টেম পরীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। গাজাকে একটি ‘আদর্শ সামরিক পরীক্ষাগার’ হিসেবে ব্যবহার করে সামরিক-শিল্প খাতের লাভের পথ প্রশস্ত করছে তারা।

তিনি আরও বলেন, ৪৮টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান—যাদের মধ্যে রয়েছে অস্ত্র কোম্পানি, ব্যাংক, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিক সংস্থা—এই দখলদার অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তিনি জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য চুক্তি স্থগিতকরণ এবং দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক অপরাধে জড়িত করপোরেট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করারও আহ্বান জানান তিনি। তাঁর মতে, এখন আর অজ্ঞতা বা আদর্শগত অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয় কারণ এই গণহত্যা বিশ্ববাসীর চোখের সামনেই ঘটছে।

বক্তব্যের শেষভাগে আলবানিজ বিশ্বব্যাপী নাগরিক সমাজ, ট্রেড ইউনিয়ন, আইনজীবী ও সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা বয়কট, নিষেধাজ্ঞা এবং চাপের মাধ্যমে গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত