ঢাকা, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২

ভয়াবহ পাচারচক্রে বাংলাদেশি নারীরা

২০২৫ আগস্ট ১৮ ১৪:৪১:২২

ভয়াবহ পাচারচক্রে বাংলাদেশি নারীরা

ভারতে দিন দিন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বাংলাদেশি নারী ও কিশোরী পাচার, যাদের একবার ভারতে পৌঁছানোর পর জোরপূর্বক নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে যৌনপল্লির ভয়াবহ অন্ধকার জগতে। সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চালানো অভিযানে এ চিত্র উঠে এসেছে। এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, গত এক মাসে অন্তত চারজন বাংলাদেশি নারী ও কিশোরীকে হায়দরাবাদের যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সর্বশেষ গতকাল রোববার (১৭ আগস্ট) হায়দরাবাদের একটি যৌনপল্লি থেকে এক বাংলাদেশি কিশোরীকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। খাইরতাবাদ, চাদেরঘাট ও বান্দলাগুডার যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করা নারীরা সবাই পাচারের শিকার।

এর আগেও, মহারাষ্ট্রের পালঘরে ১৪ বছর বয়সী আরেক বাংলাদেশি কিশোরীকে একটি যৌন র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সে জানায়, মাত্র তিন মাসেই তাকে প্রায় ২০০ জন পুরুষ দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

উদ্ধার কার্যক্রমটি পরিচালনা করে মানব পাচারবিরোধী ইউনিট (AHTU), এক্সোডাস রোড ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ও হারমনি ফাউন্ডেশন। যৌথভাবে ২৬ জুলাই অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে মীরা-ভায়ন্দর ভাসাই-ভিরার পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, পাচারকারীরা বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে নারী ও কিশোরীদের স্থল কিংবা নৌপথে ভারতে নিয়ে আসে। এরপর ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করে চাকরির লোভ, উচ্চ বেতন বা ভালো জীবনের আশ্বাস দিয়ে তাদের বিভিন্ন শহরের যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে চরম দারিদ্র্যপীড়িত এলাকাগুলো থেকেই সবচেয়ে বেশি নারী পাচারের শিকার হচ্ছেন।

বহু বছর ধরেই হায়দরাবাদে এই ধরনের বাংলাদেশি নারী পাচারের সক্রিয় চক্র কাজ করছে। শুধু বাংলাদেশই নয়, একইভাবে উজবেকিস্তান, রাশিয়া, ইউক্রেন, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল থেকেও নারীরা পাচার হয়ে আসছে এসব শহরে।

ভারতের সেন্ট্রাল সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ড (CSWB) পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতের বাণিজ্যিক যৌনশোষণের শিকার নারীদের মধ্যে অন্তত ২.৭ শতাংশ বাংলাদেশি নাগরিক। দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই ও হায়দরাবাদের মতো বড় শহরে পাচার হওয়া নারীদের বেচাকেনা হয় দালালদের কাছে।

বিশেষ করে আত্তাপুর, বান্দলাগুডা, চিন্তালমেট, হিমায়াতসাগর রোড ও চম্পাপেট—এলাকাগুলোতে পাচারকারীদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানব পাচার রোধে দুই দেশের মধ্যে বহুপাক্ষিক সমন্বয় ও কড়াকড়ি নজরদারি এখন সময়ের দাবি। না হলে এই অমানবিক বাস্তবতা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

রাকসুতে পরাজিত প্রার্থীদের ব্যতিক্রমী আয়োজন

রাকসুতে পরাজিত প্রার্থীদের ব্যতিক্রমী আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু) নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা একটি মিলনমেলার আয়োজন করেছেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের... বিস্তারিত