ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২
শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান

চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত যেন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে, ছয়টি ব্যাংক রেকর্ড মুনাফা অর্জন করেছে, অন্যদিকে পাঁচটি ব্যাংক বিপুল পরিমাণ লোকসানের মুখে পড়েছে।
এই বিপরীতমুখী ফলাফলের কারণ হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঈন উদ্দিনের বলেন, খেলাপি ঋণই হলো এই ফলাফলের প্রধান কারণ।
যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কম ছিল, তারা শুধু ঋণের সুদ থেকেই আয় করেনি, বরং সরকারি ট্রেজারি বন্ডের মতো ঝুঁকিমুক্ত খাতে বিনিয়োগ করে উচ্চ মুনাফা লাভ করেছে। এই বিনিয়োগের জন্য তাদের কোনো প্রভিশন রাখতে হয়নি, যা সরাসরি তাদের মুনাফা বাড়াতে সাহায্য করেছে।
এই সময়ে রেকর্ড মুনাফা অর্জনকারী ব্যাংকগুলো হলো: ব্র্যাক ব্যাংক (৭০৮ কোটি টাকা), পূবালী ব্যাংক (৫৭৮ কোটি টাকা), প্রাইম ব্যাংক (৪১৫ কোটি টাকা), ইস্টার্ন ব্যাংক এবং যমুনা ব্যাংক (উভয়ই ৩০০ কোটি টাকার বেশি) এবং ব্যাংক এশিয়া। এসব ব্যাংকের সম্মিলিত মুনাফা ৮০ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে, পাঁচটি ব্যাংক – এবি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক – সম্মিলিতভাবে ৬ হাজার কোটি টাকার লোকসান করেছে। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাদের গোপন খেলাপি ঋণগুলো সামনে চলে আসে, যার ফলে তাদের বিশাল অঙ্কের প্রভিশন রাখতে হয়েছে। এবি ব্যাংক ১৭৫৮ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ১৬৯১ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংক ১১২৮ কোটি টাকা এবং ন্যাশনাল ব্যাংক ৯৮৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে।
এবি ব্যাংক তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাদের নিট সুদের আয় ১৪৭৩ কোটি টাকা কমে যাওয়ায় এই লোকসান হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তারা খেলাপি ঋণের বৃদ্ধি এবং উচ্চ সুদের হারের কারণে স্প্রেড কমে যাওয়াকে উল্লেখ করেছে।
ন্যাশনাল ব্যাংকও জানিয়েছে, খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় এবং আমানতের ওপর উচ্চ সুদের খরচ বহন করতে গিয়ে তাদের লোকসান হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যাংক খাতের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে আমানতকারীরা তুলনামূলকভাবে কম সুদ পেলেও সুশাসন সম্পন্ন ব্যাংকে টাকা রাখতে বেশি আগ্রহী। এর ফলে ভালো ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবাহ বাড়ছে, আর দুর্বল ব্যাংকগুলো আমানত টানতে হিমশিম খাচ্ছে। এই প্রবণতা আগামী দিনগুলোতেও চলতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বস্ত্র খাতের ১৩ কোম্পানি
- ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে আর্থিক খাতের কোম্পানি
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৭ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান
- চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে দুই কোম্পানির বাজিমাত
- রবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের মুখে গ্রামীণফোন
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
- টানা পতনেও শেয়ারবাজারে পুনরুজ্জীবনের সংকেত
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- ছাত্ররাজনীতি থাকবে কিন্তু কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে: বাগছাস
- শেখ সেলিমের ২১টি বিও অ্যাকাউন্ট ও ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
- চলতি সপ্তাহে ৬ কোম্পানির ডিভিডেন্ড অনুমোদন