ঢাকা, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২

মার্জিন রুল থেকে মিউচুয়াল ফান্ড—সবখানেই আসছে বড় পরিবর্তন

২০২৫ অক্টোবর ২৯ ২০:২৫:০০

মার্জিন রুল থেকে মিউচুয়াল ফান্ড—সবখানেই আসছে বড় পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেক: দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে অন্যতম বড় সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর ২০২৫) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে দেশের শীর্ষ ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানসমূহের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই সংস্কারমূলক কাজের সময়সীমা ঘোষণা করেছেন বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, "বিএসইসি শেয়ারবাজার সংস্কারের জন্য কাজ করছে। সংস্কারের মূল ক্ষেত্রসমূহ—মার্জিন রুল, মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা, আইপিও বিধিমালা এবং কর্পোরেট গভর্নেন্স নীতিমালা যুগোপযোগী করার কাজ করছে বিএসইসি এবং সব ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে।" তিনি দৃঢ়তার সাথে জানান, "সংস্কারের সবক্ষেত্রেই আমরা ন্যায়সঙ্গত ও যুক্তিযুক্ত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী দুই মাসের মধ্যেই এগুলোর সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।"

বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, "বিগত সময়ের অনিয়মের বিচার নিশ্চিত করে বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতেও কমিশন কাজ করছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা নেগেটিভ ইকুইটিসহ শেয়ারবাজারের মূল সমস্যাগুলোর সমাধানেও কমিশন কাজ করছে এবং দ্রুতই বিষয়গুলোর সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "শীঘ্রই আমরা এর সুফল পাবো।"

তিনি ব্রোকারদের উদ্দেশ্যে বলেন, শেয়ারবাজার উন্নয়নের জন্য সকলকে মিলে কাজ করতে হবে এবং হাল ছাড়া যাবে না। শেয়ারবাজারে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি তৈরি করার ওপর তিনি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

এই উচ্চপর্যায়ের সভায় দেশের শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা, উন্নয়ন ও সংস্কার উদ্যোগসমূহ এবং সংশ্লিষ্টদের করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়। এসময় দেশের শীর্ষ ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিরা বাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধি, কারসাজি প্রতিরোধ, নেগেটিভ ইকুইটির পরিকল্পনা মাফিক সমাধান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মার্জার ও বন্ধের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং অনলাইনে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করার ওপর জোর দেন।

এছাড়াও, ব্রোকাররা শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট পলিসির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, ই-কেওয়াইসি চালু, ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির তালিকাভুক্তি এবং ভালো বেসরকারি কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্তির সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানান। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঘোষিত কিন্তু অপরিশোধিত ডিভিডেন্ডের (লভ্যাংশ) ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, শেয়ারবাজারে সুশাসন নিশ্চিতকরণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা-এক্সচেঞ্জ-সিডিবিএলসহ সকল স্তরে সক্ষমতা বৃদ্ধি, ‘এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩’ এর রিভিউ, গুজব প্রতিরোধ এবং সিসিবিএলকে কার্যকর করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ নিয়েও সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিএসইসি'র পক্ষে চেয়ারম্যান ছাড়াও কমিশনার মুঃ মোহসিন চৌধুরী, মোঃ আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ এবং মোঃ সাইফুদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ব্রোকারদের পক্ষ থেকে ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট ও ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের পরিচালক সাইফুল ইসলাম, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ রহমত পাশা এবং লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও ও পরিচালক খন্দকার সাফফাত রেজাসহ অন্য শীর্ষস্থানীয় ব্রোকার হাউসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত