ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২
মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব: ফের অস্থির শেয়ারবাজার

শেয়ারবাজারে মার্জিন ঋণ নিয়ে নতুন ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। বলা হচ্ছে, মার্জিন ঋণের নীতিমালা হঠাৎ পরিবর্তন হয়েছে এবং এখন ঋণের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে শেয়ার প্রতি আয় ও শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। এই গুজবের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং বাজারে উদ্বেগ ও অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে।
গত চার কার্যদিবস ধরে বাজারে দরপতনের পেছনে মূল্য সংশোধনের পাশাপাশি এই গুজবের প্রভাব বেশ বড়। বিশেষ করে গত দুই দিন দরপতনের কারণে মার্জিন ঋণ নিয়ে ছড়ানো গুজবকে প্রধান কারণ হিসেবে অভিহিত করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করেন, বিনিয়োগকারীরা এই গুজবে উদ্বিগ্ন হয়ে ব্যাপক বিক্রির চাপ সৃষ্টি করছেন।
তবে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে জানা গেছে, তারা মার্জিন ঋণের কোনো নতুন নীতিমালা গ্রহণ করেনি। এছাড়া, এনএভিপিএসের সঙ্গে ঋণের হার সামঞ্জস্য করার মতো কোনো বাস্তবতা বর্তমানে দেশে নেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এই গুজব সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
মার্জিন ঋণ হলো শেয়ারবাজারে শেয়ার কেনার জন্য বিনিয়োগকারীদের দেওয়া বিশেষ একটি ঋণ সুবিধা। মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারহাউজের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা এই ঋণ গ্রহণ করেন। যদি কোনো কারণে বিনিয়োগকারীর শেয়ারের দাম কমে যায় এবং ঋণের অনুপাত নির্দিষ্ট সীমার নিচে নেমে আসে, তখন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান তাদের মার্জিন কল পাঠিয়ে অতিরিক্ত টাকা জমা দেওয়ার অনুরোধ করেন। যদি বিনিয়োগকারী এই মার্জিন কলে সাড়া না দেন, তবে ব্রোকারেজ বা মার্চেন্ট ব্যাংক তাদের শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারে, যা ফোর্সড সেল নামে পরিচিত।
অনেক সময় বিনিয়োগকারীরা নিজের ক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত মার্জিন ঋণ গ্রহণ করে যা তাদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অতীতে মার্জিন ঋণের অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের কারণে বিনিয়োগকারী ও ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই এই বিষয় নিয়ে নিয়মিত আলোচনা ও নজরদারি চলছে।
চলতি বছরের শুরুতে গঠিত শেয়ারবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স বিএসইসিকে কিছু সুপারিশ জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, যাদের বিনিয়োগ ১০ লাখ টাকার কম, তাদের মার্জিন ঋণ বন্ধ করার প্রস্তাব। এছাড়াও, যাদের নিয়মিত আয়ের উৎস নেই, তাদের জন্যও ঋণ সুবিধা সীমিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত, গৃহিণী ও শিক্ষার্থীদেরও মার্জিন ঋণ থেকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ এই শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নেয়ার ক্ষমতা কম এবং বাজারে দরপতনের সময় তারা অতিরিক্ত টাকা জমা দিতে অক্ষম হয়, ফলে ফোর্সড সেলের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ারবাজারে এটাই সর্বশেষ প্রস্তাবনা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বস্ত্র খাতের ১৩ কোম্পানি
- ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে আর্থিক খাতের কোম্পানি
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৭ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে দুই কোম্পানির বাজিমাত
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
- রবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের মুখে গ্রামীণফোন
- টানা পতনেও শেয়ারবাজারে পুনরুজ্জীবনের সংকেত
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- চলতি সপ্তাহে ৬ কোম্পানির ডিভিডেন্ড অনুমোদন
- শেখ সেলিমের ২১টি বিও অ্যাকাউন্ট ও ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
- ছাত্ররাজনীতি থাকবে কিন্তু কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে: বাগছাস