ঢাকা, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

‘শেয়ারবাজারের মাঠ খেলার জন্য পুরোদমে প্রস্তুত’

ডুয়া নিউজ- শেয়ারবাজার
২০২৫ জুলাই ০৪ ২১:৪২:০৩
‘শেয়ারবাজারের মাঠ খেলার জন্য পুরোদমে প্রস্তুত’

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার এম. আলী আকবর মন্তব্য করেছেন, বর্তমানে দেশের শেয়ারবাজার খেলার জন্য পুরোদমে প্রস্তুত এবং যারা বিনিয়োগ করতে চান, তাদের জন্য ভালো ফল পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

আজ শুক্রবার (০৪ জুলাই) সাভারের আশুলিয়ায় ব্র্যাক সিডিএমে ক‍্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সাংবাদিকদের দুই দিনব্যাপী আবাসিক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

কর্মশালার শুরুতে ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানান বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ, নির্বাহী পরিচালক মীর মোশাররফ হোসেন, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিষ্টস ফোরামের (সিএমজেএম) সভাপতি এস এম গোলাম সামদানী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কমিশনের সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম।

কমিশনার এম. আলী আকবর বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আপনারা কি ফাউল খেলতে চাচ্ছেন, এমন মাঠ নেই তাই আস্থা পাচ্ছেন না? নাকি শৃঙ্খলভাবে খেলার মাঠে আস্থা পাচ্ছেন না, যেখানে প্লেয়িং ফিল্ডে সুন্দরভাবে খেলা যায়? আমি বুঝতে পারছি না বিনিয়োগকারীরা কোন ধরনের মার্কেটের জন্য আস্থার সংকট দেখছে। আমরা চাই বিনিয়োগকারীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন। আর শেয়ারবাজারও যেন উন্নতি করে।"

আস্থা সংকট নিয়ে চলমান আলোচনার প্রেক্ষিতে আলী আকবর বলেন, "শেয়ারবাজারে আস্থা সংকট নিয়ে কথা হচ্ছে। আমি নিজেও জানি না আস্থা কখন কিভাবে, কার ওপর হয় এবং তা কতক্ষণ থাকে। তবে আমি বুকে হাত রেখে বলতে পারব এই বাজারে আমার কোনো নেতিবাচক ভূমিকা নেই। এই কমিশন ব‍্যক্তিগত স্বার্থে কাজ করে না। বিশ্বাস বা কনফিডেন্স কখন কোন বিষয়ে কার ওপর হয়, সেটা কেউ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারেন না। এই মার্কেটের ব্যাপারে কোনো ধরনের নেতিবাচক ভূমিকা বিএসইসির নেই। আমরা চাই মার্কেট ভালো হোক।"

বিএসইসির জরিমানা প্রসঙ্গে আলী আকবর ব্যাখ্যা করেন, সাধারণত প্রশ্ন জাগে বিএসইসি এত জরিমানা কেন করে? যখন কেউ আইন বা বিধি লঙ্ঘন করে তখনই পেনাল্টি করা হয়। যে বা যারা শেয়ারবাজারকে ধ্বংস করবে বা করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবে এটা আগেও করা হয়েছে, কৌশলে। অথবা করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সত্য-সুন্দরের সাথে অসত্যকে মিশ্রণ করা যাবে না। যিনি জরিমানা পরিশোধে রাজি, তার কোনো সমস্যা নেই। আর যিনি আপিল করবেন, সেটিও তার অধিকার। কমিশনের পক্ষে এই প্রক্রিয়া বন্ধ করা সম্ভব নয়। শেয়ারবাজার ধ্বংসে যেসব চক্র সক্রিয়, বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএসইসি কমিশনার জানান, "আমরা বিশ্বাস করি এনফোর্সমেন্টের প্রয়োজন রয়েছে। এটা না করলে বাজারকে সঠিক পথে রাখা যাবে না। পেনাল্টির ব্যাপারে দুটো অপশন, একটি আমাদের পেনাল্টির টাকা আপনি দিয়ে দেবেন। অপরটি হলো টাকা না দিয়ে আপনি আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। তবে পেনাল্টির টাকা একদিন না দিন আদায় হবেই।"

এসইসি কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেছেন, শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নে কমিশন ধারাবাহিকভাবে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তারই অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সাংবাদিকদের তথ্য অনেক সময় বিএসইসির কার্যক্রমে সহায়ক ভূমিকা রাখে। অনেক সময় তারা ব্যক্তি উদ্যোগেও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন। এই প্রশিক্ষণ সাংবাদিকদের আরও ফলপ্রসূ ও তথ্যনির্ভর প্রতিবেদন তৈরি করতে উৎসাহিত করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সিএমজেএফ সভাপতি এস এম গোলাম সামদানী ভূঁইয়া প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য বিএসইসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাজার উন্নয়নে সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি এবং এই ধরনের প্রশিক্ষণ সময়োপযোগী ও ইতিবাচক উদ্যোগ।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত