ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২
যুদ্ধবিরতি হলে লাভ কার?

পারমাণবিক ইস্যুকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি হামলা যার মধ্যে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের আঘাত আন্তর্জাতিক উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এমন সংকটময় প্রেক্ষাপটে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার খবর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে—এই যুদ্ধবিরতি আসলে কার জন্য সত্যিকারের আশীর্বাদ?
সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় স্বস্তি
সবচেয়ে বড় উপকারভোগী হবে মধ্যপ্রাচ্যের সাধারণ মানুষ। সংঘাত চলতে থাকলে প্রাণহানি, মানবিক বিপর্যয় এবং শরণার্থী সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করত। যুদ্ধবিরতি অন্তত অস্থিরতা কমাবে এবং নতুন করে কূটনৈতিক সমাধানের পথ তৈরি করবে।
বিশ্ব অর্থনীতি ও জ্বালানি বাজারে ইতিবাচক প্রভাব
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত বিশ্ব জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকির ফলে তেলের দাম বেড়ে গেছে। যুদ্ধবিরতির বার্তা এই বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারে যা বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য নিঃসন্দেহে আশার আলো।
আন্তর্জাতিক কূটনীতির জন্য নতুন সুযোগ
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, রাশিয়া ও চীন—সব বড় শক্তিই এই সংঘাত বিস্তৃত হোক তা চায় না। যুদ্ধবিরতির ফলে তারা কূটনৈতিকভাবে নতুনভাবে হস্তক্ষেপের সুযোগ পাবে। সংঘাত প্রশমনে তাদের প্রচেষ্টা আরও বাস্তবভিত্তিক হয়ে উঠবে।
আঞ্চলিক শক্তিগুলোর স্বস্তি
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশিরভাগ আঞ্চলিক মিত্ররাষ্ট্র সরাসরি এই সংঘাতে জড়াতে চায় না। যুদ্ধবিরতি তাদের জন্য স্বস্তির নিঃশ্বাস। ইরাক, সিরিয়া, লেবাননের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর জন্যও এটি স্থিতিশীলতার বার্তা।
ইরান ও ইসরায়েলের শাসকগোষ্ঠীর জন্যও এক ধরনের লাভ
যদিও যুদ্ধবিরতি তারা আন্তরিকভাবে চায় না, বাস্তব রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে এটি দুই পক্ষের শাসকদের জন্যও উপকারী। দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ অভ্যন্তরীণ চাপ ও আন্তর্জাতিক সমালোচনা বাড়াবে। যুদ্ধবিরতি তাদের জন্য কৌশল পুনর্বিন্যাস এবং রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত করার সুযোগ এনে দেবে।
তবে সাউথ এশিয়ান ইউথ ফর পিস অ্যান্ড প্রোসপারিটি সোসাইটির গবেষণা সহকারী শফিকুল আলম শাহিন মনে করেন, এখন যুদ্ধবিরতি হলেও তা ইরানের শর্তে। ১২ দিনের ইরান-হিজরায়েল সংঘাতে সামরিকভাবে দুপক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু রাজনৈতিক ও কৌশলগতভাবে ইরান অনেকটাই লাভবান। হিজরায়েলের আয়রন ডোমের সীমাবদ্ধতা, ইন্টেলিজেন্স দূর্বলতা এবং আমেরিকা ছাড়া অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়েছে। অন্যদিকে ইরান তার রেজিস্টেন্স ও দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতির প্রমাণ দিয়েছে। আমেরিকা সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে ইরানকে সময় দিয়েছে নিউক্লিয়ার ম্যাটেরিয়াল সরাতে। এই যুদ্ধ দেখিয়ে দিয়েছে এখনকার ভূ-রাজনীতিতে ইরানকে পুরোপুরি পরাজিত করা সহজ নয়। জয় আপাতত পলিটিক্যাল ফ্রন্টে ইরানের।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সরাসরি পারমাণবিক অ'স্ত্র পাবে ইরান!
- ‘বিপর্যয় থেকে বিশ্ব মাত্র কয়েক মিনিট দূরে’
- প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা থেকে লোকসানে গেল চার ব্যাংক
- সাত কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের পুঁজির বড় অংশ উধাও
- ইরানে বড় ধ্বংসলীল : ৬ বিমানবন্দরে একযোগে হামলা
- হা'মলার পর হন্যে হয়ে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের
- ভিডিও ফাঁস করার বিষয়ে মুখ খুলেছেন শরীয়তপুরের সেই ডিসি
- মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা; উত্তেজনা তুঙ্গে
- দুর্বল ১৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির চিন্তাভাবনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
- যেসব শর্তে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলো ইরান
- জবাব দিতে শুরু করেছে ইরান
- একাধিক মিসাইল ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া
- শেয়ার কিনেছেন চার কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা
- ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাবিতে ক্লাস ছুটি কতদিন, যা জানা গেল
- মোবাইলে কল এলেই ইন্টারনেট বন্ধ? এক মিনিটেই সমাধান!