ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

গা-জা নিয়ে পেপ গার্দিওলার বক্তব্য ভাইরাল

২০২৫ জুন ১০ ২৩:০৫:৩৯

গা-জা নিয়ে পেপ গার্দিওলার বক্তব্য ভাইরাল

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। সম্প্রতি এই হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যায় রূপ দিয়েছে দেশটি। নির্বিচারে নিরীহ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে দখলদার দেশটি। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এ পর্যন্ত অন্তত ৫৪,৮৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এটা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে পুরো বিশ্ব। ফিলিস্তিনিদের বেদনা পৌঁছে গেছে বিশ্বের কোটি কোটি মানবতাবাদী মানুষের মনে। এই তালিকা থেকে বাদ যাননি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ ম্যানেজার পেপ গার্দিওলাও। তিনি গাজায় চলমান যুদ্ধকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ ও ‘ভীতিকর’ বলে অভিহিত করেছেন। ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট গ্রহণকালে দেওয়া আবেগঘন বক্তব্যে তিনি বলেন, "শিশুদের ওপর চালানো নৃশংসতা তার হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে তুলেছে।"

গার্দিওলা তার বক্তৃতায় বলেন, "গাজার দৃশ্যগুলো এতটাই কষ্টদায়ক যে আমার পুরো শরীর ব্যথায় মোচড়ায়। এটি কোনো আদর্শিক মতবিরোধ নয়, এটি মানুষের জীবন ও প্রতিবেশীর প্রতি সহানুভূতির প্রশ্ন।"

জনপ্রিয় এই কোচ আরও বলেন, "প্রতিদিন যখন আমি আমার সন্তানদের—মারিয়া, মারিয়ুস ও ভ্যালেন্তিনার মুখ দেখি, তখন গাজার শিশুদের চিত্র চোখে ভেসে ওঠে। আমি শঙ্কিত হই—কারণ এই চার-পাঁচ বছরের শিশুরা আজ গাজায় মরছে, কাল হয়তো আমাদের আশেপাশের শিশুরা।"

গার্দিওলার এই বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

পেপ গার্দিওলা সবসময়ই তার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে তিনি বহুবার প্রকাশ্যে মত প্রকাশ করেছেন। ২০১৮ সালে প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে হলুদ ফিতা পরায় ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাকে ২০,০০০ পাউন্ড জরিমানা করে।

তার বক্তৃতায় গার্দিওলা একটি গল্প তুলে ধরেন— "একটি জঙ্গলে আগুন লাগে। সব প্রাণী আতঙ্কে। কিন্তু একটি ছোট পাখি তার ঠোঁটে সামান্য পানি নিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করে। একটি সাপ তাকে বলে, ‘তুমি পারবে না আগুন নেভাতে।’ পাখি জবাব দেয়, ‘জানি, কিন্তু আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি।"

এই গল্পের মাধ্যমে গার্দিওলা বোঝাতে চেয়েছেন, "আমরা হয়তো বড় কিছু করতে পারব না, কিন্তু নীরবতা কখনোই সমাধান নয়। আমাদের উপস্থিতি, আমাদের কণ্ঠই হতে পারে পরিবর্তনের সূচনা।"

গার্দিওলা শুধু ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ১৮টি ট্রফি জয় করেননি, বরং তার পরিবার পরিচালিত “Guardiola Sala Foundation”-এর মাধ্যমে সমাজের অবহেলিতদের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এই মানবিক অবদান এবং সামাজিক দায়িত্ববোধের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে প্রদান করা হয়েছে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি।

গার্দিওলার মতো আরও অনেক ফুটবলার ইসরায়েল-গাজা সংঘাত নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। মিশরের তারকা মোহাম্মদ সালাহ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন—“নিরীহ প্রাণগুলো রক্ষায় একত্রিত হন।” নেদারল্যান্ডসের উইঙ্গার আনোয়ার এল ঘাজি প্রো-প্যালেস্টাইন একটি পোস্ট দেওয়ার পর তার ক্লাব মেইনজ তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। পরে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাওয়া অর্থ তিনি গাজার শিশুদের সহায়তায় একটি প্রকল্পে দান করেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত