ঢাকা, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঈদুল আজহার দিনের ফজিলতপূর্ণ আমল

ডুয়া নিউজ- লাইফস্টাইল
২০২৫ জুন ০৬ ১৬:১৯:৫০
ঈদুল আজহার দিনের ফজিলতপূর্ণ আমল

ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এটি উৎসর্গ, ত্যাগ, একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের এক মহান উপলক্ষ। এ দিনটির মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে প্রাণোৎসর্গ বা কোরবানি। মহান আল্লাহ কুরআনে বলেন:

“অতএব তুমি তোমার রবের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করো এবং কোরবানি করো।” (সুরা কাউসার: আয়াত ২)

ঈদুল আজহার দিনে কিছু বিশেষ সুন্নত ও আমল রয়েছে যেগুলো পালন করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। নিচে তা তুলে ধরা হলো—

১. গোসল ও মিসওয়াক করা

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, “আল্লাহর রাসুল (স.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে গোসল করতেন।” (বুখারি: ১/১৩০)

২. উত্তম পোষাক পরিধান করা

ইসলামের সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা অনুযায়ী ঈদের দিন সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও সাধ্যানুযায়ী উত্তম পোষাক পরা সুন্নত। নবীজির (স.) দুটি বিশেষ জামা ছিল যা তিনি ঈদ ও জুমায় পরতেন।(সুনানে বায়হাকি: ৬৩৬৩)

৩. ঈদগাহে যাওয়ার আগে কিছু না খাওয়া

ঈদুল আজহার দিন নামাজের আগে পানাহার না করে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত। নামাজের পর কোরবানির গোশত দিয়ে প্রথম খাবার গ্রহণ করাই উত্তম।(তিরমিজি: ৫৪২)

৪. তাকবির বলা

ঈদুল আজহার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো জোরে জোরে তাকবির পাঠ করা:“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।”এ তাকবির ৯ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত আদায় করা সুন্নত। (ফাতহুল বারি: ২/৫৮৯)

৫. পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া

অসুবিধা না থাকলে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়াটাই সুন্নত। রাসুল (স.) এমনটিই করতেন।(তিরমিজি: ১২৯৫)

৬. ভিন্ন রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া

ঈদের দিনে ঈদগাহে যেতে ও আসতে ভিন্ন দুটি রাস্তা ব্যবহার করাও নবীজির (স.) সুন্নত।(বুখারি: ৯৮৬)

৭. শিশুদের সঙ্গে নেওয়া

নবীজী (স.) সাহাবায়ে কেরাম ও ছোট ছোট শিশুদের সঙ্গে নিয়ে তাকবির বলতে বলতে ঈদগাহে যেতেন।(সুনানে কুবরা বায়হাকি: ৬৩৪৯)

৮. ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়

সাহাবারা ঈদের দিন একে অপরকে বলতেন:

“তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম”(আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের পক্ষ থেকে কবুল করুন)।(ফাতহুল কাদির: ২/৫১৭)

৯. খুতবা শ্রবণ

ঈদের নামাজ শেষে খুতবা শোনা সুন্নত। চাইলে থাকা যাবে, না চাইলে চলে আসাও বৈধ।(ইবনু মাজাহ: ১০৭৩)

১০. নামাজের পর কোরবানি

ঈদের নামাজের পরই কোরবানি করা উত্তম। নামাজের আগে কোরবানি করলে তা কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে না বরং তা শুধু সাধারণ মাংস খাওয়ার কাজেই ব্যবহৃত হবে।(বুখারি: ৯৬৮; মুসলিম: ১৯৬১)

১১. ঈদের নামাজ শেষে দুই রাকাত নফল

ঈদের নামাজ শেষে ঘরে ফিরে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা সুন্নত। ঈদগাহে কোনো নফল নামাজ পড়া মাকরুহ।(ইবনে মাজাহ: ১২৯৩)

অতিরিক্ত তথ্য:

ঈদের নামাজে আজান বা ইকামত নেই।

এই নামাজ কাজা করা যায় না।

জামাতে আদায় করাই ঈদের নামাজের শর্ত।

ঈদুল আজহার নামাজ ঈদুল ফিতরের চেয়ে আগে পড়া উত্তম।

কোরবানি দেয়ার নিয়ত থাকলে ঈদের নামাজ ও কোরবানি না হওয়া পর্যন্ত নখ ও লোম না কাটা মোস্তাহাব।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত