ঢাকা, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এবার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে যুক্তরাজ্য

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুন ০৩ ০৯:৫৮:২২
এবার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে যুক্তরাজ্য

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার দেশকে ‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ২ জুন (সোমবার) স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে তিনি নতুন প্রতিরক্ষা কৌশল প্রকাশ করেন।

স্টারমার জানান, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১২টি আক্রমণাত্মক সাবমেরিন নির্মাণ, পারমাণবিক ও অন্যান্য আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থায় বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ২.৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

‘স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে বড় হুমকি’

স্টারমার বলেন, ‘আমরা এমন এক সময়ে আছি যখন ইউরোপে যুদ্ধ, পারমাণবিক হুমকি, সাইবার হামলা এবং ব্রিটিশ জলসীমা ও আকাশসীমায় রাশিয়ার আগ্রাসন বাস্তব হুমকি হয়ে উঠেছে।’ তাঁর মতে সংঘাত এড়াতে প্রস্তুতি গ্রহণই সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ।

সাবেক ন্যাটো প্রধানের নেতৃত্বে কৌশল পর্যালোচনা

সাবেক ন্যাটো মহাসচিব জর্জ রবার্টসনের নেতৃত্বে নতুন প্রতিরক্ষা কৌশল পর্যালোচনা চলছে। এতে রয়েছে সাত হাজার দূরপাল্লার অস্ত্র সংগ্রহ, এক বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ে ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং একটি নতুন সাইবার কমান্ড গঠন।

সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ

ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর জনবল বর্তমানে ঐতিহাসিকভাবে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। এ অবস্থায় নতুন সেনা নিয়োগ ও ধরে রাখার লক্ষ্যে সেনাসদস্যদের আবাসন উন্নয়নে অতিরিক্ত ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যুক্তরাজ্য নিজস্ব ড্রোন নির্মাণ এবং গোলাবারুদের মজুত বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রনির্ভরতা কমানোর ইঙ্গিত

নতুন কৌশলে পারমাণবিক অস্ত্রবাহী যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব এসেছে যা যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক ছায়া থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র প্রতিরক্ষা সক্ষমতা গড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এইউকেইউএস (AUKUS) জোটের অংশ হিসেবে তৈরি করা হবে নতুন সাবমেরিন। এই পদক্ষেপ চীনের আঞ্চলিক প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন স্টারমার।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও লিবারেল ডেমোক্র্যাট এমপি মাইক মার্টিন মন্তব্য করেছেন, নতুন কৌশল স্পষ্ট করে দিয়েছে যে যুক্তরাজ্য এখন পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করতে পারছে না।

নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই ঘোষণা এমন সময় এলো যখন ইউক্রেন যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে এবং বিশ্বজুড়ে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। ব্রিটিশ সরকার বলছে, এটি ইউরো-আটলান্টিক অঞ্চলের জন্য এক নতুন প্রতিরক্ষা চিত্রের সূচনা।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত