ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

অভ্যুত্থানের পর নেপালের নির্বাচনে নতুন রেকর্ড, অংশ নিচ্ছে ১২৫ দল

২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৯:১৪:৫৯

অভ্যুত্থানের পর নেপালের নির্বাচনে নতুন রেকর্ড, অংশ নিচ্ছে ১২৫ দল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম নির্বাচন ঘিরে নেপালে ব্যাপক রাজনৈতিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেশটির নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আসন্ন সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নিতে ইতোমধ্যে ১২৫টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। এসবের বেশিরভাগই পুরোনো ও প্রতিষ্ঠিত দল হলেও, সাম্প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নতুন প্রজন্মের তরুণ নেতাদের গঠিত বেশ কিছু দলও এবার নির্বাচনের ময়দানে নামছে।

বুধবার নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র নারায়ণ প্রসাদ ভট্টরাই বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, আমরা বিশ্বাস করি—সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক নির্বাচনের মাধ্যমে নেপালে একটি নতুন নেতৃত্ব আনতে আগ্রহী।

তিনি আরও বলেন, দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়া আরও দুই সপ্তাহ উন্মুক্ত থাকবে। চূড়ান্ত দলীয় তালিকা এবং নবগঠিত দলগুলোর বিস্তারিত তথ্য ১৮ নভেম্বরের পর প্রকাশ করা হবে।

গত সেপ্টেম্বরে প্রাণঘাতী দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতনের পর নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, আগামী বছরের ৫ মার্চের মধ্যে সংসদের নিম্নকক্ষের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত ৭৩ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী কার্কি ইতোমধ্যে ছোট পরিসরের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। তাঁর লক্ষ্য—নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামোতে কার্যকর সংস্কার আনা।

সম্প্রতি, গত ২৯ অক্টোবর, কার্কি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা ও তরুণ প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রথম বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দল নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি–ইউনিফাইড মার্কসবাদী লেনিনবাদী (সিপিএন-ইউএমএল)-এর প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।

বৈঠকের পর এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ পোস্টে প্রধানমন্ত্রী কার্কি লিখেছেন, সংলাপের মাধ্যমে আমরা সহযোগিতা ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছি। নতুন প্রজন্ম, রাজনৈতিক দল এবং সরকার—সবাইয়ের লক্ষ্য একটাই: সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সময়মতো নির্বাচন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেপালের রাজনীতি এখন এক অনিশ্চিত পর্যায়ে। প্রতিষ্ঠিত দলগুলোর প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ভট্টরাই জোর দিয়ে বলেন, কমিশন শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও ভয়মুক্ত পরিবেশে নির্বাচন আয়োজনের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে তরুণদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ থেকে শুরু হয় আন্দোলন। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর তা সহিংস রূপ নেয়। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সংঘাতে ৭৬ জনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হন। পরিণতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগে বাধ্য হন।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত