ঢাকা, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

গাজায় যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে হামাসের বড় পদক্ষেপ

২০২৫ অক্টোবর ১৩ ১৫:৪৪:১৯

গাজায় যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে হামাসের বড় পদক্ষেপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :দুই বছর ধরে চলা ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান টেনে গাজায় বন্দি থাকা সবশেষ ২০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এই পদক্ষেপটি এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে।

ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয় দুই ধাপে— প্রথমে সাতজন এবং পরে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকা থেকে আরও ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, হামাসের হাতে থাকা জীবিত সব জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং এর বিপরীতে ইসরায়েল মুক্তি দেবে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে।

এই সময়েই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এয়ার ফোর্স ওয়ানে চড়ে ইসরাইলে পৌঁছান এবং বেন গুরিওন বিমানবন্দরে তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা জানান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, রেড ক্রসের তত্ত্বাবধানে প্রথম ধাপে সাতজন জিম্মিকে গ্রহণ করা হয়েছে, এবং দ্বিতীয় ধাপের জিম্মি হস্তান্তরের প্রস্তুতিও চলছে। এই খবরে তেল আবিবের ‘হোস্টেজেস স্কয়ার’-এ জড়ো হওয়া শত শত মানুষ উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। সেখানে উপস্থিত নোগা নামের এক নারী বলেন, “আমি আবেগে আপ্লুত, কিন্তু একইসঙ্গে কষ্টও পাচ্ছি— কারণ আমার আত্মীয় এখনো ফেরেননি।”

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের একটি নজিরবিহীন হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল এবং নিহত হন প্রায় ১,২০০ জন, যাঁদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এর আগে বিভিন্ন ধাপে ২০৪ জন জিম্মি মুক্তি পেয়েছিলেন।

গাজায় যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি আনলেও শহরটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত। গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় ফিরে আসা ৩৮ বছর বয়সী ফাতিমা সালেম বলেন, “সবকিছু বদলে গেছে—ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, পরিচিত মানুষ। তবুও মনে হচ্ছে, আমি ঘরে ফিরেছি।” তিনি জানান, ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির পাশে একটি তাঁবু খাটিয়ে তাঁরা সেখানে থাকবেন যতদিন পুনর্গঠন শুরু না হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কায়া কালাস হামাসের মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিদের ঘটনাকে ‘শান্তির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বেই।

এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন শারম আল শেখে ট্রাম্পের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতব্য শান্তি সম্মেলনের দিকে, যেখানে একটি স্থায়ী সমাধান নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত