ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২

আইপিও প্রক্রিয়া সহজীকরণে এগোচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ২২:০৫:০৩

আইপিও প্রক্রিয়া সহজীকরণে এগোচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশের শেয়ারবাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ডিএসই ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, আইপিও প্রক্রিয়া সহজীকরণের পাশাপাশি তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিগুলোর কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত অভিযোগও রেগুলেটরদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিকুঞ্জে অবস্থিত ডিএসই টাওয়ারে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিক লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) নির্বাহী কমিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট রূপালি হক চৌধুরীর নেতৃত্বে সংগঠনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের শেয়ারবাজার কাঙ্ক্ষিত উন্নতি অর্জন করতে পারেনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টায় আশার আলো দেখা যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং বিএসইসি সহ অন্যান্য সংস্থা বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক উন্নয়নে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, সঠিক প্রাইসিং নিশ্চিত করা গেলে ভালো উদ্যোক্তারা বাজারে আসবেন এবং আন্ডাররাইটাররা চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স হিসেবে কাজ করবে। সংশোধিত আইপিও ব্যবস্থার মাধ্যমে ভালো কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হবে আর দুর্বল কোম্পানিগুলো বাদ পড়বে। এ ছাড়া গ্রীন চ্যানেল ও ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দ্রুত আইপিও অনুমোদনের পথ সুগম হবে। নির্বিঘ্নে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সম্পন্ন করতে ডিজিটাল বা হাইব্রিড পদ্ধতির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সংস্থা ও অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা সম্ভব। ডিএসই ও বিএপিএলসির মধ্যে সহযোগিতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে, নতুন প্রবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করবে এবং জাতীয় অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট রূপালি হক চৌধুরী সভায় বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি বাজারের স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে তাদের সংগঠন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি মনে করেন, সমস্যার চেয়ে সমাধানের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা জরুরি। এজন্য ড. আনিসুজ্জামানসহ কমিশন ও সরকারি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা নিয়মিত বৈঠক করেছেন।

তিনি আরও বলেন, নতুন আইডিয়া ও বিজনেস প্ল্যানের মাধ্যমে ছোট কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে পারলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বিস্তৃত হবে। একই সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কমপ্লায়েন্স প্রক্রিয়া সহজ করা প্রয়োজন। তার মতে, এই সভা অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং শেয়ারবাজার উন্নয়নে একসাথে কাজ করার মঞ্চ তৈরি করেছে।

সভায় বিএপিএলসির প্রতিনিধিরা আরও বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে ছিল লিস্টিং প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা, সুশাসন কাঠামো, কর নীতি, আইপিও প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা ও ভ্যালুয়েশন সমস্যা, কোম্পানি ক্যাটাগরি, গ্রীন চ্যানেল প্রবর্তন, রেগুলেটরদের মধ্যে সমন্বয়, ডিজিটাল রিপোর্টিং সিস্টেম এবং তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর বৈষম্য নিরসন।

আলোচনায় সবাই একমত হন যে, সমন্বিত উদ্যোগ ও গঠনমূলক সহযোগিতার মাধ্যমেই বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও টেকসই শেয়ারবাজার গড়ে তোলা সম্ভব। ডিএসইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিএপিএলসির সঙ্গে এই সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

এ ছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন ডিএসইর পরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (অব.), সৈয়দ হাম্মাদুল করীম, মোহাম্মদ শাহজাহান, মিনহাজ মান্নান ইমন, রিচার্ড ডি. রোজারিও এবং ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুর রহমান।

এএসএম/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত