ঢাকা, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২
শেয়ার কারসাজিতে শ্যালক–দুলাভাইর দেড় কোটি টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ বিমা কোম্পানির শেয়ার কারসাজির ঘটনায় তিন ব্যক্তিকে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শাস্তিপ্রাপ্তরা হলেন—মো. সাইফ উল্লাহ, মো. এ জি মাহমুদ এবং এস এম মোতাহারুল জানান। তারা দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের হিরুর সহযোগী হিসেবে শেয়ার কারসাজিতে জড়িত ছিলেন। কমিশনের তথ্য বলছে, এর আগেও একাধিকবার তাঁদের বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
যেসব কোম্পানিতে কারসাজি
কারসাজির অভিযোগ ওঠা কোম্পানিগুলো হলো—গ্লোবাল ইনস্যুরেন্স, ইসলামী ইনস্যুরেন্স বাংলাদেশ, সেন্ট্রাল ইনস্যুরেন্স, পিপলস ইনস্যুরেন্স এবং রিপাবলিক ইনস্যুরেন্স।
২০২১ সালের ১৯ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিনে তারা সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়ান। এই সময়ে গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের দাম বাড়ানো হয় ২৩.৯২ শতাংশ, ইসলামী ইনস্যুরেন্সের ২৫.২৮ শতাংশ, সেন্ট্রাল ইনস্যুরেন্সের ৩৪.৬৫ শতাংশ, পিপলস ইনস্যুরেন্সের ৩৭.৩৫ শতাংশ এবং রিপাবলিক ইনস্যুরেন্সের ১৪.৭৪ শতাংশ।
কারসাজির পদ্ধতি
বিএসইসির তদন্তে দেখা যায়, তিন ব্যবসায়ী যোগসাজশ করে কৃত্রিম বাজার তৈরি করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল—বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে নিজেদের লাভবান হওয়া। কমিশন মনে করে, তাঁদের কর্মকাণ্ড ইচ্ছাকৃত ও গুরুতর, যা শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত করেছে।
জরিমানার হিসাব
এই ঘটনায় প্রধান ভূমিকা রাখা সাইফ উল্লাহকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া তিনি ও মো. এ জি মাহমুদকে যৌথভাবে ৪২ লাখ টাকা এবং এস এম মোতাহারুল জানানকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সব মিলিয়ে মোট জরিমানার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকায়।
পারিবারিক যোগসাজশ
এই কারসাজিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাইফ উল্লাহ। তাঁকে সহযোগিতা করেছেন তাঁর শ্যালক মো. এ জি মাহমুদ এবং সহযোগী মোতাহারুল জানান। তাঁদের বিও হিসাব রয়েছে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্স লিমিটেডে।
অতীতের নজির
এরা নতুন নন—এর আগেও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কারসাজির জন্য একাধিকবার জরিমানার মুখে পড়েছেন। ২০২০ সালে প্রভাতি ইনস্যুরেন্সের শেয়ারে কারসাজির দায়ে সাইফ উল্লাহকে ১৫ লাখ এবং এ জি মাহমুদকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্সের কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে হিরুর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানকে ১ কোটি ৪০ লাখ, সাইফ উল্লাহকে ৫০ লাখ এবং মাহমুদকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
মে মাসে ইনডেক্স অ্যাগ্রোর শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে সাইফ উল্লাহকে ৩০ লাখ এবং মাহমুদকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
আগস্টে জনতা ইনস্যুরেন্সের ঘটনায় সাইফ উল্লাহকে ৪০ লাখ, আর মাহমুদ ও মোতাহারুল জানানকে ২০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এএসএম/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড কার্যকারিতায় বিএসইসির নতুন উদ্যোগ
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
- শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মুনাফা চান? জেনে নিন ৫ মন্ত্র
- এক কোম্পারি অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে তোলপাড়
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন হাউজিং
- শেয়ারবাজারে প্রসারিত হচ্ছে টেকসই বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত
- ধস কাটিয়ে অবশেষে শেয়ারবাজারে উত্থানের স্রোত
- রেকর্ড ডেটে শেয়ার লেনদেন চালুর পরিকল্পনা ডিএসইর
- মিরাকেলের বিরুদ্ধে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপন করার অভিযোগ
- স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে এডিএন টেলিকমের নতুন পদক্ষেপ
- একাদশে ভর্তি: চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ