ঢাকা, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২

প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পরও অস্থির নেপাল, মোদির সামনে বড় সঙ্কট

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১১ ১২:০৩:০৮

প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পরও অস্থির নেপাল, মোদির সামনে বড় সঙ্কট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত কয়েকদিনে নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছে, যেখানে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দ্রুত সহিংস রূপ নেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়ানোর কারণে সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলন আরও তীব্র হয় এবং একদিনের মধ্যেই অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

তবে ওলির পদত্যাগ সত্ত্বেও নেপালের বিভিন্ন এলাকা অস্থির থাকে। পার্লামেন্ট ভবনে ভাঙচুর, লুটপাট এবং রাজনীতিবিদদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশব্যাপী কারফিউ জারি করে নেপালের সেনাবাহিনী। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের জন্য প্রতিবেশী দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকায় ভারতের জন্য প্রতিবেশী অঞ্চলের হঠাৎ রাজনৈতিক পরিবর্তন সামলানো আরও জটিল হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে, বাংলাদেশের সঙ্গে এক বছর ধরে উত্তেজনা বিরাজমান, আর মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধও সমস্যার মুখ।

ভারত-নেপালের সম্পর্কেও অতীতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ২০১৯ সালে ভারতের মানচিত্র প্রকাশে নেপালের দাবি করা সীমান্ত অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি ভারতের চীনের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্তে নেপাল ক্ষুব্ধ হয়, যা বেইজিং সফরে নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি উল্লেখ করেন।

ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে নেপাল ভারতের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ভারতের পাঁচটি অঙ্গরাজ্যের সঙ্গে নেপালের ১,৭৫০ কিলোমিটার উন্মুক্ত সীমান্ত রয়েছে। এছাড়া নেপালের অধিকাংশ জনগণ ভারতের সঙ্গে পারিবারিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনে আবদ্ধ। ১৯৫০ সালের চুক্তি অনুযায়ী নেপালি নাগরিকরা ভারতে ভিসা ছাড়াই চলাচল ও কর্মসংস্থান করতে পারে এবং ভারতের সেনাবাহিনীতে এখনো প্রায় ৩২ হাজার গুরখা সেনা কর্মরত।

নেপালের অস্থিরতা ভারতের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের জন্য উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারতের উচিত হবে নেপালের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করা, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আস্থা তৈরি করা এবং তাদের জন্য শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা। অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল অশোক মেহতা বলেন, শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে প্রতিবেশী দেশে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সেখানে স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই দিনে নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

এমজে

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

দুপুরে জরুরি বৈঠকে বসছে উপদেষ্টা পরিষদ

দুপুরে জরুরি বৈঠকে বসছে উপদেষ্টা পরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের নজর এখন গণভোটের সিদ্ধান্তে। আজ সোমবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে... বিস্তারিত