ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২

নোবেল ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে মামলা

২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ২২:০১:৪০

নোবেল ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে মামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদোকে শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ দাবি করে নোবেল ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে সুইডেনে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। একই সঙ্গে পুরস্কারের অর্থ হিসেবে মাচাদোর কাছে স্থানান্তরিত ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার (প্রায় ১.১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) জব্দ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

অ্যাসাঞ্জের অভিযোগ, চলতি বছর মাচাদোকে শান্তি পুরস্কার প্রদান সুইডিশ আইনের আওতায় তহবিলের ‘গুরুতর অপব্যবহার’ এবং ‘যুদ্ধাপরাধে সহায়তা’র শামিল। তার দাবি, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন ও নোবেল পুরস্কারের মূল দর্শনের পরিপন্থী।

নোবেল কমিটির ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, গণতন্ত্রের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা এবং একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের জন্য সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে মারিয়া করিনা মাচাদোকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

তবে অ্যাসাঞ্জ মনে করেন, এ সিদ্ধান্ত ১৮৯৫ সালে নোবেল পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেলের উইলের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নোবেলের ইচ্ছানামায় বলা হয়েছিল, শান্তি পুরস্কার দেওয়া হবে সেই ব্যক্তিকে, যিনি জাতিগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জোরদার, স্থায়ী সেনাবাহিনী হ্রাস বা বিলুপ্তি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বাধিক অবদান রাখবেন।

অভিযোগে অ্যাসাঞ্জ আরও উল্লেখ করেন, মাচাদোকে পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে ‘শান্তির প্রতীককে যুদ্ধের অস্ত্রে’ পরিণত করা হয়েছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক অপরাধমূলক তৎপরতাকে উসকে দেওয়ার সঙ্গে মাচাদোর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

বুধবার দায়ের করা ওই ফৌজদারি অভিযোগে নোবেল ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত ৩০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তহবিল অপব্যবহার, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে সহায়তা এবং আগ্রাসনমূলক কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সুইডিশ পুলিশ বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছে, তারা অভিযোগটি গ্রহণ করেছে এবং বিষয়টি সুইডিশ অর্থনৈতিক অপরাধ কর্তৃপক্ষের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধসংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথি প্রকাশ করে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। এরপর তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক মামলা দায়ের হয় এবং তাকে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি দীর্ঘদিন লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন এবং সেখানে প্রায় সাত বছর অবস্থান করেন। পরে ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়ে যুক্তরাজ্যের কারাগারে পাঠানো হয় তাকে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালানোর পর, ২০২৪ সালে মার্কিন বিচার বিভাগের সঙ্গে একটি আবেদন চুক্তির অংশ হিসেবে গুপ্তচরবৃত্তি আইনের একটি অভিযোগে দোষ স্বীকারের পর অ্যাসাঞ্জ মুক্তি পান। কারামুক্ত হয়ে তিনি নিজ জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত