ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২
নারীবিহীন কমিশনে নারী আসনের সিদ্ধান্ত: ফুঁসছে নারী সমাজ

চার মাসের বেশি সময় ধরে আলোচনার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, যা নারী অধিকারকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তাঁদের প্রধান আপত্তির কারণ হলো, এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশগ্রহণ ছিল প্রায় অনুপস্থিত। শুরু থেকেই কমিশনে কোনো নারী সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এবং অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই নারী প্রতিনিধি ছাড়াই আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, নারীবিহীন একটি কমিশনের মাধ্যমে নারীদের আসন নিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক এই বিষয়ে বলেন, "অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী—তাঁদের বাদ রেখে বৈষম্য দূর করা অসম্ভব। এটা ঐকমত্য কমিশনের গঠনে ও কাজের ধরনেই স্পষ্ট।"
গত ১৪ জুলাই থেকে অন্তত চার দিন ধরে এই বিষয়ে আলোচনা করে কমিশন। এ সময় বিএনপি, জামায়াত, সিপিবি, বাসদ, এলডিপি-সহ বেশিরভাগ দলই কোনো নারী প্রতিনিধিকে আলোচনায় যুক্ত করেনি। কেবল এনসিপি, জেএসডি, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এবি পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বাসদ-মার্ক্সবাদী এবং আমজনতার দলে কিছু নারী প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন।
ঐকমত্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন বহাল থাকবে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোকে কমপক্ষে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়নের অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে সব দল এতে একমত নয়। বিএনপি ৫ শতাংশ প্রার্থী মনোনয়নের প্রস্তাব মেনে নিলেও, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর বিরোধিতা করেছে। তারা সরাসরি নির্বাচনের ১৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশ জাসদও এই প্রস্তাবে 'নোট অব ডিসেন্ট' দিয়েছে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন সংসদে ৩০০টি সংরক্ষিত নারী আসন এবং সেগুলোতে সরাসরি নির্বাচনের সুপারিশ করেছিল, তবে ঐকমত্য কমিশন তা গ্রহণ করেনি। শিরীন পারভিন হক মনে করিয়ে দেন, "৫ শতাংশ হারে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিলে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব পেতে আমাদের ২০৪৩ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।"
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তকে 'পশ্চাৎপদ' আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম সরাসরি নির্বাচনের ভিত্তিতে ১০০ সংরক্ষিত নারী আসনের দাবি তুলেছেন।
শিক্ষাবিদ ও নারী কমিশনের সদস্য মাহিন সুলতান গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী রাজনৈতিক দলে কমপক্ষে ৩৩ শতাংশ নারী অংশগ্রহণের আহ্বান থাকলেও কেবল ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থিতাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর মতে, "নারীর গুরুত্ব এখনো উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে।"
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড কার্যকারিতায় বিএসইসির নতুন উদ্যোগ
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- একাদশে ভর্তি: চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ
- শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মুনাফা চান? জেনে নিন ৫ মন্ত্র
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- মালিকানায় পরিবর্তন আসছে ইয়াকিন পলিমারের
- এক শেয়ারের জোরেই সবুজে ফিরল শেয়ারবাজার
- শেয়ার কারসাজিতে শ্যালক–দুলাভাইর দেড় কোটি টাকা জরিমানা
- শেয়ারবাজারে প্রসারিত হচ্ছে টেকসই বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত
- ধস কাটিয়ে অবশেষে শেয়ারবাজারে উত্থানের স্রোত
- রেকর্ড ডেটে শেয়ার লেনদেন চালুর পরিকল্পনা ডিএসইর
- উৎপাদন বাড়াতে নতুন যন্ত্রপাতিতে বিনিয়োগ করছে দুই কোম্পানি
- স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে এডিএন টেলিকমের নতুন পদক্ষেপ