ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২

ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্ত

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ২১:১৭:০৩

ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের আর্থিক সংকটে পড়া ও ব্যবসায়িক ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরায় সচল করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন একটি বিশেষ ঋণ পুনর্গঠন নীতিমালা চালু করেছে। এ নীতির আওতায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।

নীতি চালু করার কারণ:বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য অনুযায়ী, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী অনেক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত সমস্যার (অর্থনৈতিক মন্দা, মুদ্রার অস্থিরতা, ইউটিলিটি সমস্যাসহ) কারণে ঋণ পরিশোধে বিপাকে পড়েছে। ফলে ব্যাংকিং সেবা যথাযথভাবে প্রাপ্ত না হওয়ায় ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতি ব্যাংকের ঋণ আদায় ও বিতরণকে প্রভাবিত করেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।

গ্রেস পিরিয়ড ও সুবিধা:নতুন সার্কুলারের মূল সুবিধা হলো গ্রেস পিরিয়ডের ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলো দুই বছর পর্যন্ত মূলধন বা সুদ পরিশোধ থেকে বিরত থাকতে পারবে। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা পুনরায় সচল করে আয় থেকে ঋণ শোধ করতে পারবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত শ্রেণিকৃত ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ ২ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে। এর জন্য ঋণগ্রহীতাকে ন্যূনতম ২ শতাংশ নগদ ডাউনপেমেন্ট দিতে হবে। অতীতে তিনবার বা তার বেশি পুনঃতফসিল করা ঋণের ক্ষেত্রে ডাউনপেমেন্ট ৩ শতাংশ নির্ধারিত হবে। নতুন সুদের হার সংশ্লিষ্ট খাতের সর্বনিম্ন সুদহারের চেয়ে ১ শতাংশ কম হতে পারবে। কিস্তি পরিশোধ হবে মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে।

আর্থিক সক্ষমতা যাচাই ও শর্তাবলী:ব্যাংকগুলো ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করবে এবং ঝুঁকি নিরূপণ করবে। প্রয়োজন হলে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নিরীক্ষা করানো যেতে পারে।

ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতারা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নীতি সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ব্যাংক আবেদন পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবে, তবে ডাউন পেমেন্ট নগদায়নের পরই আবেদন কার্যকর হবে।

নীতিগত সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি লাগবে না, তবে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে। একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ থাকলে প্রধান ঋণদাতা ব্যাংক সমন্বয় করবে। ৩০০ কোটি টাকার ঋণ বা তার বেশি হলে ‘নীতি সহায়তা সংক্রান্ত বাছাই কমিটি’-এর অনুমোদন প্রয়োজন। তবে জালিয়াতি বা প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া ঋণ এবং চূড়ান্তভাবে ঘোষিত খেলাপিদের ক্ষেত্রে এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।

নতুন নীতিমালা ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে এবং আবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত