ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
শেয়ারবাজার উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া পাঁচ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর অংশ হিসেবে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত ১৮ মে বিএসইসি একটি চিঠির মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে বিএসইসি জানায়, ১১ মে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।
পাঁচ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে—বিদেশি ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বাজারে ছাড়া, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের ব্যবধান বৃদ্ধি, বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় তিন মাসের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু, শেয়ারবাজারে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে উৎসাহিত করা।
বিএসইসি এসব নির্দেশনার বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য পৃথক দায়িত্ব নির্ধারণ করেছে। শিল্প মন্ত্রণালয় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে ছয় মাসের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ছাড়ার কার্যক্রম শুরু করতে বলা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আগামী বাজেটে শেয়ারবাজারবান্ধব প্রণোদনা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হয়েছে, ছয় মাসের মধ্যে বড় কোম্পানিগুলো যাতে সহজে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ তুলতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে।
শনিবার ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সেমিনারে বিএসইসি কমিশনার মোহসিন চৌধুরী জানান, কমিশন প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।
তবে বাস্তবায়ন নিয়ে কিছু প্রশ্নও উঠেছে। ওই সেমিনারে সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পাঁচ নির্দেশনার মধ্যে অন্তত তিনটি সরাসরি সরকারের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো, তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য সুবিধা সৃষ্টি, আইনি জটিলতা নিরসন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
তার মতে, কোনো সংস্কার কার্যক্রম টেকসই করতে হলে তা হতে হবে নির্দিষ্ট, বাস্তবায়নযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক। কেবল বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ওপর নির্ভর করলে তা দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে বিএসইসির ২১ জন কর্মকর্তাকে চাকরি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের একটি অংশ ব্যতিক্রমধর্মী কর্মবিরতিতে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবি করে। যদিও চেয়ারম্যানের গঠিত তদন্ত কমিটি একাধিক অনিয়ম শনাক্ত করে প্রতিবেদন দিলেও, এখনও পর্যন্ত বড় কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ দেখা যায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে বিস্ময়: এক লাখ টাকার শেয়ার ৮০ কোটি!
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- মুনাফা থেকে লোকসানে তথ্য প্রযুক্তির দুই কোম্পানি
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- ঢাবিতে হটাৎ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, ককটেল বি-স্ফো-র-ণ
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড বেড়েছে শেয়ারবাজারের সাত ব্যাংকের
- মূলধনের বেশি রিজার্ভ জ্বালানি খাতের ১৪ কোম্পানির
- মুনাফা বেড়েছে ১৮ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির