ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

১৫ বীমা কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ও দাবি পরিশোধের তথ্য তলব

ডুয়া নিউজ- অর্থনীতি
২০২৫ মে ২৪ ১০:৪৪:১১
১৫ বীমা কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ও দাবি পরিশোধের তথ্য তলব

ডুয়া নিউজ: দেশের লাইফ বীমা খাতে আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি ১৫টি জীবন বীমা কোম্পানির ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়কালের ব্যাংক হিসাব ও বীমা দাবি পরিশোধের বিস্তারিত তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

আইডিআরএ’র পরিচালক আহম্মদ এহসান উল হান্নান এবং সহকারী পরিচালক মো. শামসুল আলম খান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বৃহস্পতিবার (২২ মে) সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে প্রেরণ করা হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, সাত কার্যদিবসের মধ্যে এইসব তথ্য আইডিআরএ’র নিকট জমা দিতে হবে।

যেসব কোম্পানির তথ্য চাওয়া হয়েছে

সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

তথ্য চাওয়ার পেছনের কারণ

আইডিআরএ সূত্র জানায়, বিগত কয়েক বছর ধরেই দেশের বীমা খাতে আর্থিক অনিয়ম, বীমা দাবির বিলম্বে পরিশোধ, অথবা অব্যবস্থাপনার নানা অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং লাইফ বীমা খাতের বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃস্থাপন ও গ্রাহকসেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কোম্পানিগুলোর আর্থিক লেনদেন ও দাবি পরিশোধ কার্যক্রম পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ উদ্যোগের মাধ্যমে লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যাংক হিসাব ও বীমা দাবির বাস্তবতা, যথাসময়ে দাবি নিষ্পত্তির হার এবং সম্ভাব্য আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্য চাওয়ার ধরন

আইডিআরএ’র নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রত্যেকটি কোম্পানিকে ২০২২, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালব্যাপী ব্যাংক হিসাবের বিবরণ এবং একই সময়কালে পরিশোধিত বীমা দাবিগুলোর বিস্তারিত তালিকা জমা দিতে হবে। এতে গ্রাহককে প্রদেয় বীমার অঙ্ক, পরিশোধের তারিখ, ক্লেইম জমা দেওয়ার তারিখ এবং দাবির নিষ্পত্তির অবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

আইডিআরএ’র অবস্থান

আইডিআরএ’র এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমরা চাই, গ্রাহকের অর্থ সুরক্ষিত থাকুক। অনেক বীমা প্রতিষ্ঠান এখনো সময়মতো দাবি পরিশোধ করে না। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবেও অসংগতি পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় বীমা শিল্পে আস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা শক্ত অবস্থান নিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “যদি কোনো কোম্পানি তথ্য দিতে ব্যর্থ হয় বা সন্দেহজনক আর্থিক তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে লাইসেন্স স্থগিত কিংবা বাতিল পর্যন্ত করা হতে পারে।”

বীমা গ্রাহকদের প্রত্যাশা

বাংলাদেশের আর্থিক খাতে জীবন বীমা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দেশে প্রায় ৩ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জীবন বীমার সঙ্গে যুক্ত। তাদের মধ্যে অনেকেই সময়মতো বীমার টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করে থাকেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে, জীবন বীমা খাতে গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধার হবে এবং কোম্পানিগুলোর মধ্যে দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত