ঢাকা, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

খাওয়ার খোঁটা দেওয়ায় মা-সহ দুই শিশুকে হ-ত্যা

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ১৫ ২৩:৫৫:০১
খাওয়ার খোঁটা দেওয়ায় মা-সহ দুই শিশুকে হ-ত্যা

ভাইয়ের বাসায় আশ্রয় আর দুই বেলা খাবারের বিনিময়ে ভাবির নিত্যদিনের খোঁটা—এই ‘অপমান’ সহ্য করতে না পেরেই ময়মনসিংহের ভালুকায় দুই শিশুসহ ভাবিকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন দেবর নজরুল ইসলাম। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ন কবীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই বিভৎস ট্রিপল মার্ডারের নেপথ্যে বড় কোনো কারণ নেই, বরং পারিবারিক তুচ্ছ বিষয় এবং ঘাতকের অসুস্থ জেদই এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ।

ওসি জানান, জয়দেবপুর থানার একটি হত্যা মামলায় দুই বছর জেল খাটার পর বড় ভাই রফিকুল ইসলাম একটি সমিতি থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ করে তাকে জামিনে মুক্ত করেন। গত দুই মাস ধরে তিনি ভাইয়ের ভাড়া বাসাতেই থাকছিলেন। কিন্তু ভাইয়ের বাসায় বিনা খরচে থাকা-খাওয়া নিয়ে ভাবি ময়না আক্তারের অসন্তোষ ছিল। এই নিয়ে তিনি প্রায়ই নজরুলকে খোঁটা দিতেন, যা তার মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।

জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল জানায়, এরই জেরে গত ১৪ জুলাই ভোররাতে তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় ভাবি ময়না আক্তার (২৮) এবং তার দুই শিশু সন্তান রাইসা মনি (৭) ও নিরবকে (২) ধারালো বঁটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান।

এই ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় এবং নিহত ময়নার বড় ভাই মো. জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ভালুকা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে ঘাতক নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নজরুলের জীবন নানা অপরাধ ও বঞ্চনার মধ্য দিয়ে কেটেছে। নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বাসিন্দা নজরুলের বাবা মানসিক বিকারগ্রস্ত এবং শৈশবে মা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। ফুফুর বাসায় বড় হলেও বকাঝকার কারণে একসময় পালিয়ে যান এবং ভবঘুরে জীবনযাপন করতে গিয়ে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত