ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
মৌলভিত্তির সাত শেয়ারের কারণে সবুজ থেকে লালে শেয়ারবাজার

ডুয়া নিউজ: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বাজার শুরুর পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশা জাগানিয়া প্রবণতা কাজ করছিল। কারণ আজ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে বিনিয়োগকারী সংগঠনগুলোর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। গত দুই কার্যদিবসেও বাজারে বৈঠকটি ঘিরে কিছুটা ইতিবাচকতা ধারা দেখা গিয়েছিল। মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছিল ১৯ পয়েন্ট, আর বুধবার বেড়েছিল আরও ৬ পয়েন্ট।
কিন্তু বৈঠকের দিন আজ বৃহস্পতিবার বাজারের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। লেনদেনের শুরুতে উত্থানের ঝলক দেখা গেলেও মধ্যভাগ থেকে বড় মূলধনী কয়েকটি মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারদর পতন শুরু হয় এবং তা দিনভর চলতে থাকে।
লংকাবাংলা অ্যানালাইসিস পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, আজ ডিএসইতে ২০০ প্রতিষ্ঠানের পতন হয়েছে। তবে মাত্র সাতটি কোম্পানির পতনের কারণেই সূচক কমেছে প্রায় ১৬ পয়েন্টের বেশি। পুরো বাজারে সূচকের মোট পতন হয়েছে ১৬ পয়েন্টের কিছু বেশি, অর্থাৎ সাত কোম্পানিই ডিএসইর সূচক পতনের মূল কারণ।
কোম্পানিগুলো হলো: স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক এবং ম্যারিকো বাংলাদেশ। এ সাতটি কোম্পানিই দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয়, মৌলভিত্তি শক্তিশালী এবং নিয়মিত ভালো ডিভিডেন্ড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে এদের ভাবা হয়ে থাকে।
তবে বাজারে দেখা যাচ্ছে, মৌলভিত্তি ভালো হলেও এসব কোম্পানিগুলোতে বড় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম। এর অন্যতম কারণ হলো—এ ধরনের বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা প্রায় অসম্ভব। ফলে যেসব বিনিয়োগকারী স্বল্পমেয়াদি লাভে আগ্রহী, তারা অপেক্ষাকৃত ছোট, দুর্বল মৌলভিত্তির কিন্তু উচ্চমূল্য ওঠানামার শেয়ারগুলোর দিকেই ঝুঁকছেন। এতে মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলো পিছিয়ে পড়ছে।
এই পরিস্থিতি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তাকেও সামনে নিয়ে আসে। ব্যাংক, বীমা এবং মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ না থাকায় বাজারের ভারসাম্য রক্ষা করা যাচ্ছে না। তারল্য সংকটের সময় তারা বড় কোম্পানিতে বিনিয়োগ না করে অপেক্ষা করার নীতি গ্রহণ করেছে।
সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ রক্ষার জন্য মৌলভিত্তির কোম্পানিতে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। অন্যথায় বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে না, বরং সূচক অল্প কিছু দুর্বল কোম্পানির ওঠানামার উপর নির্ভর করতে থাকবে। নীতিনির্ধারকদের উচিত মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর শেয়ারকে আরও বিনিয়োগবান্ধব করে তোলা এবং বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ বড় কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে যাওয়া মানে দীর্ঘমেয়াদি শেয়ারবাজারের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়া।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে বিস্ময়: এক লাখ টাকার শেয়ার ৮০ কোটি!
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- মুনাফা থেকে লোকসানে তথ্য প্রযুক্তির দুই কোম্পানি
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ঢাবিতে হটাৎ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, ককটেল বি-স্ফো-র-ণ
- ডিভিডেন্ড বেড়েছে শেয়ারবাজারের সাত ব্যাংকের
- মূলধনের বেশি রিজার্ভ জ্বালানি খাতের ১৪ কোম্পানির
- মুনাফা বেড়েছে ১৮ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির