ঢাকা, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জম্মু-কাশ্মীরে নামছে ভারতের সাবেক সেনারা

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ মে ১৮ ১৭:১৫:৩০
জম্মু-কাশ্মীরে নামছে ভারতের সাবেক সেনারা

ডুয়া ডেস্ক: টানা কয়েকদিন ধরে চলা হামলা, পাল্টা হামলা ও উত্তেজনার পর সম্প্রতি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান। যুদ্ধবিরতির পর দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখছেন এবং বিরতির মেয়াদও ক্রমেই বাড়ানো হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। এবার জম্মু-কাশ্মিরে নিরাপত্তা জোরদারে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি। স্থানীয় সময় শনিবার (১৭ মে) বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘কাশ্মিরে নিরাপত্তা জোরদারে এবার সাবেক সেনাদের মাঠে নামাচ্ছে ভারত সরকার। গত সপ্তাহে পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া যুদ্ধবিরতির পর শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।’

গত মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে। ভারত এ ঘটনার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে। পরে দুই দেশের পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হন।

জম্মু ও কাশ্মির প্রশাসনের এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তায় সাবেক সেনা সদস্যদের কাজে লাগানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৪ হাজার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যকে নন-কমব্যাট্যান্ট স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৩৫ জনের কাছে বৈধ লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। সরকারের মতে, স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

এএফপি জানিয়েছে, ভারতশাসিত কাশ্মিরে সাবেক সেনা সদস্যরা মূলত “স্ট্যাটিক গার্ড” হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের উপস্থিতি প্রতিরোধমূলক ভূমিকা রাখবে এবং স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তা সমন্বয়ও বাড়াবে বলেও মনে করছে প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, ভারতশাসিত কাশ্মিরে ইতিমধ্যে প্রায় ৫ লাখ ভারতীয় সেনা মোতায়েন রয়েছে। অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের মূল কেন্দ্র। ১৯৮৯ সাল থেকে কাশ্মিরে বিদ্রোহী সংগঠনগুলো স্বাধীনতা কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করে অঞ্চলটিকে কেন্দ্রীয় শাসনের আওতায় আনে, যার পর সংঘর্ষের মাত্রা কিছুটা হ্রাস পায়। তবে গত বছর দক্ষিণ কাশ্মিরে কয়েকটি প্রাণঘাতী হামলার পর ভারত হাজার হাজার অতিরিক্ত সেনা ও বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করে।

সরকার জানিয়েছে, গত তিন বছরে এমন হামলায় অন্তত ৫০ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এর আগেও কোভিড-১৯ মহামারির সময় প্রায় ২,৫০০ সাবেক সেনা সদস্যকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছিল।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত