ঢাকা, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
.jpg)
দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের নাম ঘিরে উদঘাটিত হয়েছে এক বিস্ময়কর ও জটিল চিত্র। সাম্প্রতিক সময়ে কুষ্টিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যে উঠে এসেছে গোপন অপারেশন, বিদেশে হত্যাকাণ্ডের ছক, গোয়েন্দা সংস্থার সম্পৃক্ততা এবং রাজনৈতিক প্রভাবের চাঞ্চল্যকর বিবরণ।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানায়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোনো প্রকার আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই রাতের আঁধারে সিলেট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আনা হয় সুব্রত বাইনকে। তিনি তখন ভারতের কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW ও সামরিক গোয়েন্দা MI দীর্ঘদিন ধরে তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিল এবং মূল্যবান সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তাকে দেশে ফেরানোর পেছনে কোনো আনুষ্ঠানিক বন্দি বিনিময় চুক্তি ছিল না। বরং অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ অনুমোদনে এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল হাসানের তত্ত্বাবধানে বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়।
সূত্র বলছে, সুব্রত বাইনকে ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে হত্যার একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছিল। হামলার সময় নির্ধারিত ছিল শুক্রবারের জুমার নামাজের সময়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মিশন সফল হওয়ার পর তাকে হত্যা করে সকল প্রমাণ গোপন করার কথাও ছিল।
এই অভিযানের জন্য সুব্রতকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়—স্নাইপার কৌশল, নির্ভুল নিশানা এবং অস্ত্র পরিচালনার দক্ষতা অর্জনে। এমনকি পাকিস্তানি পাসপোর্ট ব্যবহার করে তাকে লন্ডনে পাঠানো এবং কাজ শেষে কানাডায় পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও ছিল।
২০২৫ সালের মে মাসে কুষ্টিয়ার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সুব্রত বাইন ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। বর্তমানে তিনি ৮ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
রিমান্ডে তিনি জানিয়েছেন, তার নেতৃত্বাধীন একটি দল বিএনপি, জামায়াত ও নবগঠিত এনসিপির নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। টার্গেটদের তালিকায় ছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সার্জিস আলমসহ আরও অনেকে।
এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত অস্ত্র দেশের সীমান্তপথে আনা হতো এবং রাজধানীর মগবাজার, গুলশান, শাহবাগ, বাড্ডা প্রভৃতি অঞ্চলে সক্রিয় সন্ত্রাসী চক্রের কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো।
সুব্রতের দাবি এসব পরিকল্পনার পেছনে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নিষিদ্ধ ঘোষিত শীর্ষ নেতার প্রত্যক্ষ মদদ ছিল। রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, এনটিএমসির সাবেক ডিজি জিয়াউল হাসান ও ডিআইজি মনিরুল ইসলাম সরাসরি সুব্রতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পরিকল্পনার বিষয়টি তাকে অবহিত করেন। লন্ডনে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের নামও উঠে এসেছে সুব্রতের জবানবন্দিতে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় সুব্রত বাইন ‘বন্দি অবস্থায়’ নিহত হয়েছেন। এই খবরে বিশ্বাস করে তার মা কমলিনী বাইন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কিন্তু বাস্তবে সে সময় সুব্রত বাইন জীবিত ছিলেন এবং সরকারের একটি অতি গোপন মিশনের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি, তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব
- ঢাবির পীরগাছা উপজেলা সংগঠনের নেতৃত্বে রবিউল ও সৈকত
- ড. ইউনূসকে ‘আক্রমণ’!
- নানামুখী চেষ্টার পরও ভেঙে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা
- মন্দার বাজারে আলো ছড়িয়েছে ২০ শেয়ার
- ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
- শেয়ারবাজার ধসের দায় চাপছে বিএসইসি নেতৃত্বের ওপর