ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ

আর্থিক সংকটের কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১৮টি ব্যাংককে ডিভিডেন্ড ঘোষণা ও বিতরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১-এর ২২ ধারা উল্লেখ করে ২১ মে জারি করা এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা দুর্বল এবং প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে, ফলে তারা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না।
নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলো হলো
এবি ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এসবিএসি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) এবং রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, যেসব ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতি পূরণে ‘ডেফারেল সুবিধা’ গ্রহণ করেছে, তাদের ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ড বিতরণ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রভিশন ঘাটতি ও সময় বৃদ্ধি
প্রভিশন ঘাটতির কারণে উল্লেখিত ১৮ ব্যাংক ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তাদের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক সময়সীমা ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ায়। অধিকাংশ ব্যাংককে প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময়ও দেওয়া হয়েছে।
নতুন নির্দেশনা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়, যেসব ব্যাংকের ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে, তাদের আর্থিক বিবরণীতে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। একইসঙ্গে, প্রভিশন, লাভ-ক্ষতি ও মূলধন পর্যাপ্ততা বিষয়ক ঘাটতির তথ্যও প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি এক মাসের মধ্যে সময়বদ্ধ ও বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে বোর্ড অনুমোদিতভাবে তা জমা দিতে হবে। নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী ও দাখিলকৃত তথ্যে অসঙ্গতি থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন নিয়ম ও ভবিষ্যৎ বিধিনিষেধ
চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন একটি নির্দেশনা জারি করে। এতে বলা হয়, ২০২৪ সাল থেকে যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণে ডেফারেল সুবিধা নেবে, তারা কোনোভাবেই ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না। পাশাপাশি আগামী বছর থেকে যেসব ব্যাংকের মোট ঋণের ১০ শতাংশের বেশি খেলাপি, সেগুলোর ওপরও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
বিএবি’র প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ব্যাংকের আস্থার ভিত্তি হলো আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহক। ডিভিডেন্ড না দিতে পারলে এই আস্থা দুর্বল হবে। আমরা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছি, কিন্তু তারা অবস্থান পরিবর্তন করেনি।
ডিভিডেন্ড ঘোষণাকারী ব্যাংকসমূহ
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৬টি নির্ধারিত সময়ে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। এদের মধ্যে সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, যমুনা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও মিডল্যান্ড ব্যাংক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। ওয়ান ব্যাংক মুনাফা করলেও ডিভিডেন্ড দেয়নি। এছাড়া শেষ মুহূর্তে ঢাকা ব্যাংক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি পেয়েছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- সরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ, তালিকায় ২১ প্রতিষ্ঠান
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংক এমডিবিহীন, নেতৃত্ব সংকট তীব্র
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি, তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব
- ঢাবির পীরগাছা উপজেলা সংগঠনের নেতৃত্বে রবিউল ও সৈকত
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- নানামুখী চেষ্টার পরও ভেঙে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- মন্দার বাজারে আলো ছড়িয়েছে ২০ শেয়ার
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা