ঢাকা, বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২
ঢাকার ৯৮ শতাংশ শিশুর রক্তেই সীসার উপস্থিতি: আইসিডিডিআরবি

রাজধানী ঢাকার ৯৮ শতাংশ শিশুর রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রায় সীসার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এবং স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় এই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) আয়োজিত 'বাংলাদেশে সীসা দূষণ প্রতিরোধ: অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
গবেষণায় ঢাকার ২ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫০০ শিশুর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। আইসিডিডিআরবি-র সহকারী বিজ্ঞানী ডা. জেসমিন সুলতানা জানান, গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি শিশুর রক্তেই সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯৮ শতাংশ শিশুর রক্তে সীসার মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) নির্ধারিত উদ্বেগজনক মাত্রা ৩৫ মাইক্রোগ্রাম/লিটারের চেয়ে বেশি ছিল। গবেষণায় শিশুদের রক্তে সীসার মধ্যম মাত্রা পাওয়া গেছে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম/লিটার।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, সীসা-নির্ভর শিল্পকারখানা, যেমন- লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং বা সীসা গলানোর কারখানার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সীসার মাত্রা পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী শিশুদের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি। শিল্পকারখানার দূষণ ছাড়াও ঘরের জমানো ধুলা, সীসাযুক্ত প্রসাধনী, খেলনা এবং রান্নার পাত্রকেও সীসা দূষণের অন্যতম উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবি-র নির্বাহী পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদ বলেন, "সীসার বিষক্রিয়া নীরবভাবে আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ সংকুচিত করে দিচ্ছে। এটি তাদের মেধা ও সৃজনশীল বিকাশ বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি দেশে প্রতিবন্ধী শিশুর হার বাড়িয়ে দিচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, এই বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে স্থায়ী ক্ষতি করে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্ভাবনা নষ্ট করে দেয়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, রক্তে সীসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সামান্য পরিমাণ সীসাও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। ইউনিসেফের তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি শিশু সীসা দূষণের শিকার, যা সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ।
আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা ঢাকার আশপাশ থেকে সীসা-নির্ভর শিল্প-কারখানাগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলার বা দূষণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন। তারা বলেন, এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এক মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে। শিশুদের জন্য একটি সুস্থ ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে সভা শেষ হয়।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ভারতে ঢাবির দুই ছাত্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়, ক্ষোভ
- শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্র ও বহুজাতিক ১৫ কোম্পানি
- ১১'শ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিবে ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন
- স্কয়ার ফার্মার বাজার মূলধনে নতুন মাইলফলক
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৭ প্রতিষ্ঠান
- নতুন সিনেট সদস্য হলেন ঢাবির ৫ অধ্যাপক
- বিকালে আসছে ১০ কোম্পানির ইপিএস
- ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- সর্বোচ্চ উচ্চতায় ১৭ কোম্পানির শেয়ার
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ১২ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- গেস্ট হাউজ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহ উদ্ধার
- দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে ১৯ কোম্পানি
- ‘মুজিব’স ব্লান্ডার্স’: নেপথ্যের ষড়যন্ত্র উন্মোচন
- ৩ আগস্টের আগাম বার্তায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে এনসিপি
- ‘৪ আগস্ট রাতেই হাসিনা পতনের পরিকল্পনায় শিবির নেতা সিবগাতুল্লাহ’