ঢাকা, বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

চুক্তিতে ব্যর্থ হলে শাস্তি: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রতি সতর্ক বার্তা

ডুয়া নিউজ- অর্থনীতি
২০২৫ আগস্ট ০৬ ১৫:১৯:৩৮
চুক্তিতে ব্যর্থ হলে শাস্তি: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রতি সতর্ক বার্তা

দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক অব্যবস্থাপনা ও উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে চাপে থাকা সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে নতুন করে তিন বছরের সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই চুক্তির শর্ত পালনে ব্যর্থ হলে এবার আর ছাড় নয় বলে জানান—কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এই বিষয়ে নেওয়া হবে ‘কঠোর ব্যবস্থা’।

বিগত বছরগুলোতে অর্থ্যা ২০০৭ সাল থেকে নিয়মিত এক বছরের এমওইউ করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তার ফলাফল খুবই হতাশাজনক হওয়ায় এবার সময়সীমা বাড়িয়ে তিন বছর করা হচ্ছে। এতে থাকছে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, যদিও ব্যাংকগুলো শীর্ষ খেলাপি গ্রাহক থেকে ঋণ আদায়, মূলধন ঘাটতি পূরণ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, পরিচালন ব্যয় হ্রাস, ও সিবিএস বাস্তবায়নসহ নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে এবার কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ব্যাংকভেদে আর্থিক চিত্র: সোনালী ব্যাংক:২০২৪ সালের শেষে ব্যাংকটির আমানত দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ১৫ কোটি টাকা, ঋণ ৯০ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ ১৮ শতাংশ। প্রভিশন ঘাটতি ৩৭১ কোটি টাকা। শীর্ষ ২০ গ্রাহক থেকে আদায় মাত্র ৭ কোটি টাকা।

জনতা ব্যাংক:খেলাপি ঋণে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে জনতা ব্যাংক। ২০২৪ সালের শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭২ শতাংশে। প্রভিশন ঘাটতি ৪২ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা এবং মূলধন ঘাটতি ৫২ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। শীর্ষ ২০ গ্রাহক থেকে আদায় মাত্র ৫৫ কোটি টাকা।

অগ্রণী ব্যাংক: খেলাপি ঋণ ৩৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। প্রভিশন ঘাটতি ৮ হাজার ৮৪৬ কোটি এবং মূলধন ঘাটতি ৪ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। শীর্ষ ২০ গ্রাহক থেকে আদায় মাত্র ৪৩ কোটি টাকা।

রূপালী ব্যাংক: ২০২৪ সালে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ৩২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। প্রভিশন ঘাটতি ৭ হাজার কোটি এবং মূলধন ঘাটতি ৫ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। শীর্ষ ২০ গ্রাহক থেকে আদায় মাত্র ৪৫ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান: বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্চ ২০২৪ থেকে 'প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন' (PCA) কার্যকর হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে আপাতত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, যেন তারা তিন বছরের মধ্যে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে পারে। তবে এবার ব্যর্থ হলে ব্যবস্থা নেওয়ার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

পর্যবেক্ষক নেই, ঝুঁকি বাড়ছে: ৫ আগস্টের পর ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো পর্যবেক্ষক নেই। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে পর্যবেক্ষক থাকা সত্ত্বেও ব্যাংকগুলো অনিয়ম করেছে। এখন পর্যবেক্ষক না থাকায় পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত