ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
অস্বাভাবিক সেল প্রেসারে শেয়ারবাজার টালমাটাল

ডুয়া নিউজ: সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর মুহূর্তে কিছুটা ইতিবাচক পরিস্থিতি দেখা দিলেও দুপুরের দিকে পরিস্থিতি দ্রুত নেতিবাচক অবস্থার দিকে মোড় নেয়। দিনের শুরুতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২০ পয়েন্টের বেশি বাড়ে, কিন্তু বেলা ১টার মধ্যেই আগের দিনের চেয়ে ৪০ পয়েন্টের বেশি পড়ে যায়।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েকটি বড় বিনিয়োগকারী গ্রুপের হঠাৎ বিক্রির চাপ (সেল প্রেসার) বাজারকে অস্থির করে দেয়। এই সেল প্রেসার ছিল অস্বাভাবিক এবং অপ্রত্যাশিত, যার ফলে বাজারে একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে ব্যাংক, বিমা, আইটি, প্রকৌশল এবং ফাইন্যান্স খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার মূল্য এক পর্যায়ে ধস নামতে শুরু করে। দিনের মাঝামাঝি সময়ে বাজারে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার সংখ্যাই বেশি দেখা যায়।
বেলা ১টা পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৮০ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় অত্যন্ত কম। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই সময়ের মধ্যে ৩০০ কোটি টাকার উপরে লেনদেন হওয়া সাধারণ ঘটনা।
বাজারে হঠাৎ এমন পতনের ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, বাজারে কোনো অদৃশ্য চাপ কাজ করছে অথবা কোনো গোপন নেতিবাচক তথ্যের প্রতিক্রিয়া হতে পারে এই পতন। এ সময়ে মাত্র ৫০টি প্রতিষ্ঠানের দর বাড়তে দেখা যায়। বিপরীতে ২৯১টি প্রতিষ্ঠানের পতন হয়।
এক বিনিয়োগকারী মো. শামীম বলেন, “সকালে ভালোই ছিল, হঠাৎ করে সব ভেঙে পড়ল। মনে হচ্ছে কেউ বড় কিছু জানে যেটা আমরা জানি না।”
অন্য একজন বিনিয়োগকারী আবদুল হক বলেন, “তিন দিন ধরে ক্ষতির মধ্যে আছি। আজও বড় ক্ষতি হয়েছে। বাজার বুঝে উঠতে পারছি না।”
বাজার বিশ্লেষক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “বাজারে এখনো পর্যাপ্ত আস্থা ফিরেনি। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিয়েছে। আজকের সেল প্রেসার তারই বহিঃপ্রকাশ।”
তিনি আরও বলেন, “যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে বাজার আরও নিচে নামতে পারে।”
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে বাজারে নীতিগত হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে প্রয়োজন একটি স্থিতিশীল, স্বচ্ছ ও ভবিষ্যৎমুখী পলিসি পরিবেশ। বাজারে স্বাভাবিকতা ফেরাতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছ থেকে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের পদায়নেরও জোর দাবি রয়েছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে বিস্ময়: এক লাখ টাকার শেয়ার ৮০ কোটি!
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দ্যুতি ছড়াচ্ছে ১৩ ‘বনেদি’ কোম্পানি
- মুনাফা থেকে লোকসানে তথ্য প্রযুক্তির দুই কোম্পানি
- শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- সত্যিই কি স্ট্রোক করেছেন মির্জা ফখরুল? যা জানা গেল
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড বেড়েছে শেয়ারবাজারের সাত ব্যাংকের
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- মূলধনের বেশি রিজার্ভ জ্বালানি খাতের ১৪ কোম্পানির
- মুনাফা বেড়েছে ১৮ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির