ঢাকা, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২

যে কারণে তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য বেছে নিলেন ২৫ ডিসেম্বর

২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ২৩:৩৯:৫১

যে কারণে তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য বেছে নিলেন ২৫ ডিসেম্বর

সরকার ফারাবী: দীর্ঘ দেড় যুগ পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে অভূতপূর্ব আগ্রহ, কৌতূহল ও আবেগ। এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্ন ও জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদি আমিন।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, তারেক রহমানের দেশে ফেরা কেবল ব্যক্তিগত কোনো ঘটনা নয় বরং এটি দীর্ঘ অপেক্ষার পর জনগণের প্রত্যাশা ও রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

পরিবারসহ দেশে ফেরা ও বিমানবন্দরে আগমনের সময়সূচি

ড. মাহদি আমিনের ভাষ্য অনুযায়ী, তারেক রহমানের সঙ্গে একই ফ্লাইটে দেশে ফিরছেন তার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।

তাদের বহনকারী ফ্লাইটটি সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। অবতরণের পরপরই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ও প্রটোকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

দিনের কর্মসূচি ও ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ বেছে নেওয়ার কারণ

দেশে ফিরেই তারেক রহমানের প্রথম অগ্রাধিকার থাকবে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার গুরুতর অসুস্থ মা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখা।

তবে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে, জনগণের প্রত্যাশার প্রতি সম্মান জানিয়ে রাজধানীর ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফিট সড়ক) এলাকায় অতি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন।

ড. মাহদি আমিন জানান, রাজধানীর কেন্দ্রীয় বা ঐতিহাসিক স্থানগুলো ইচ্ছাকৃতভাবেই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, যেন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকে। শহরের এক প্রান্তে অবস্থিত দীর্ঘ ও প্রশস্ত এই সড়কের কেবল এক পাশের সার্ভিস লেন ব্যবহার করা হবে।

তিনি স্পষ্ট করেন, এটি কোনো জনসভা বা সংবর্ধনা নয়। এখানে তারেক রহমানই একমাত্র বক্তা থাকবেন এবং এটি কেবল দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও দোয়া কামনার একটি সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি।

জনভোগান্তি এড়াতে বিশেষ প্রস্তুতি ও ২৫ ডিসেম্বর বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা

জনদুর্ভোগ কমাতে ঢাকাজুড়ে ২০টি মেডিকেল ক্যাম্প, বক্তব্যস্থলের কাছে ৬ শয্যার অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতাল, আইসিইউ সুবিধাসম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্স, বিশুদ্ধ পানি, মোবাইল টয়লেট এবং কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করা হচ্ছে।

যানজট এড়াতে রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে আলাদা বাস পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জরুরি রোগী ও বিমানযাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে কাকলী মোড়, বিমানবন্দর এলাকা ও আব্দুল্লাহপুরে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে।

২৫ ডিসেম্বর তারিখটি বেছে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে ড. মাহদি আমিন বলেন, এটি একটি সরকারি ছুটির দিন। এর পরপরই আরও দুই দিন সরকারি ছুটি থাকায় টানা তিন দিনের ছুটি তৈরি হচ্ছে, যা যানজট ও নাগরিক চাপ কমাতে সহায়ক হবে।

তিনি আরও জানান, কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো বিশৃঙ্খলা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ আচরণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রত্যাবর্তন দেশের বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঐক্য গঠন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত