ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২

ট্রাম্পের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান কিমের, কারণ কী?

২০২৫ অক্টোবর ৩১ ২৩:৫৩:২৮

ট্রাম্পের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান কিমের, কারণ কী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক প্রকাশ্য আমন্ত্রণ সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবার কোনো সাড়া দেননি। বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে কিমের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একটি ছবি তোলার মতো কূটনৈতিক প্রয়োজনীয়তা নেই। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে।

ট্রাম্প তার এশিয়া সফরে কিমের সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং উত্তর কোরিয়াকে ‘একধরনের পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র’ হিসেবেও স্বীকার করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের নীতির পরিপন্থী। তবে পিয়ংইয়ং কোনো প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে বরং একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে এবং তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাশিয়া ও বেলারুশে পাঠিয়েছে।

হার্ভার্ড এশিয়া সেন্টারের ভিজিটিং স্কলার সং-হিওন লি বলেন, ট্রাম্পের বারবার আহ্বান কিমের জন্য একপ্রকার ‘কূটনৈতিক জয়’, যা তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে বৈধতা দেয়। তিনি আরও যোগ করেন, কিম জং উনের অংশগ্রহণের আগ্রহ জাগানোর মতো কিছু ছিল না এবং এটি ওয়াশিংটনের একটি গুরুতর ভুল।

২০১৯ সালে ট্রাম্পের টুইটার আহ্বানের পর পানমুনজমে তাদের শেষ সাক্ষাৎ হয়েছিল, কিন্তু নিরস্ত্রীকরণ ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়। এরপর উত্তর কোরিয়া নিজেকে ‘অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক রাষ্ট্র’ ঘোষণা করে এবং রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক জোরদার করে, এমনকি ইউক্রেন যুদ্ধেও রাশিয়াকে সহায়তা পাঠায়।

সাবেক সিআইএ বিশ্লেষক সু কিম বলেন, রাশিয়ার সমর্থন উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত শক্তি বৃদ্ধি করেছে। এতে কিম এখন এমন অবস্থানে আছেন, যেখানে ট্রাম্পের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করা তার জন্য সহজ।

এদিকে, কিমের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছো সন হুই সম্প্রতি মস্কো সফরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের চুক্তি করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া থেকে উত্তর কোরিয়া এখন অর্থনৈতিক সহায়তা, সামরিক প্রযুক্তি, খাদ্য ও জ্বালানি পাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কমাতে সাহায্য করছে। চীনের সঙ্গেও তাদের বাণিজ্য ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত মাসে কিমকে বেইজিংয়ের সামরিক কুচকাওয়াজে শি জিনপিং ও পুতিনের পাশে দেখা গেছে, যা তার আন্তর্জাতিক মর্যাদার এক নতুন প্রতীক।

হার্ভার্ডের লি উল্লেখ করেন, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে এই নতুন কৌশলগত সম্পর্কের কারণে ট্রাম্পের সঙ্গে শুধু একটি ফটোসেশনের জন্য কিমের কিছু হারানোর নেই। বরং তিনি এখন কৌশলগতভাবে অনেক শক্তিশালী অবস্থানে আছেন। অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভ্লাদিমির টিখোনভ বলেন, ২০১৯ সালের হ্যানয় ব্যর্থতার পর পিয়ংইয়ং এখন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের অপেক্ষায়, যেমন কূটনৈতিক স্বীকৃতি বা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত