ঢাকা, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

জার্মানিতে বাড়ছে মানবপাচার, সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী নারী

২০২৫ অক্টোবর ২২ ১২:৪৭:২৫

জার্মানিতে বাড়ছে মানবপাচার, সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী নারী

প্রবাস ডেস্ক: ইউরোপের উন্নত দেশ জার্মানিতে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে মানবপাচারের ঘটনা। ২০২৪ সালে দেশটিতে রেকর্ড সংখ্যক পাচার নথিভুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মান পুলিশের এক সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান। মানবাধিকারকর্মীদের মতে, বাস্তব পরিস্থিতি সরকারি হিসাবের চেয়েও অনেক ভয়াবহ।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জার্মানিতে অন্তত ৮৬৮টি মানবপাচারের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এর অর্ধেকের বেশি ভুক্তভোগী পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। তবে মানবপাচারের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ অনেক ভুক্তভোগী ভয় বা অনিশ্চয়তার কারণে পুলিশের কাছে অভিযোগই জানান না।

এই তথ্য প্রকাশ করেছে জার্মানির মানবপাচারবিরোধী ফেডারেল কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (কেওকে)। সংস্থাটি জানায়, তারা পাচার সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও ভুক্তভোগীদের সহায়তা প্রদানে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

অন্যদিকে, জার্মানির ফেডারেল ক্রিমিনাল পুলিশ অফিস (বিকেএ) জানায়, ২০২৪ সালে দেশটিতে মানবপাচার সংশ্লিষ্ট ৬৫০টি মামলার বিচার চলছিল, যার মধ্যে ৫৭৬টি মামলা সেই বছরেই নিষ্পত্তি হয়েছে যা জার্মানির ইতিহাসে নতুন রেকর্ড।

কেওকের মতে, জার্মানিতে অধিকাংশ পাচার যৌন শোষণ ও জোরপূর্বক দেহব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত, ফলে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে যৌন পাচারের শিকারদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন চীনের নাগরিকরা (৫৫টি মামলা), এরপর বুলগেরিয়া (৫৩টি) ও রোমানিয়া (৪৭টি)।

অভিবাসন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘মেডিয়েনডিনস্ট ইন্টেগ্রেশন’ জানিয়েছে, জার্মানিতে নথিভুক্ত পাচারের এক-তৃতীয়াংশ ভুক্তভোগী ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের নাগরিক, এক-তৃতীয়াংশ ইইউভুক্ত দেশের, আর বাকি এক-তৃতীয়াংশ জার্মান নাগরিক।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অন্তত ৫ কোটি মানুষ বিভিন্নভাবে মানবপাচারের শিকার হয়েছেন।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, জার্মানিতে পাচারের প্রকৃত পরিমাণ আরও ভয়াবহ। কারণ অনেক ভুক্তভোগী বুঝতেই পারেন না যে তারা শোষণের শিকার। আবার অনেকে আইনি জটিলতা, অনিশ্চিত ভিসা বা বাসস্থান পরিস্থিতি এবং পাচারকারীদের প্রতিশোধের আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষের কাছে যেতে ভয় পান।

সম্প্রতি জার্মানির জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম টাগেসশাউ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানিতে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে আগত অনেক ভিয়েতনামী শিক্ষানবিশ অল্প সময়ের মধ্যেই নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন। ধারণা করা হয়, তাদের একটি অংশ শুরু থেকেই পাচার চক্রের টার্গেটে পড়ে।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত