ঢাকা, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২

বুয়েট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট

২০২৫ অক্টোবর ২২ ০১:৩৫:৩৫

বুয়েট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষার্থী সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডডিট-এ অজ্ঞাত পরিচয়ে নারীদের সম্পর্কে অশালীন, অবমাননাকর ও যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য করেছেন। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ষণের বিষয়টিও স্বীকার করেছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

অভিযুক্ত শ্রীশান্ত রায় (স্টুডেন্ট আইডি- ২১০৬১৬৯) বুয়েটের "ট্রিপল ই- ২১" ব্যাচ ও আহসানউল্লাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল ও ধর্ষণ মামলায় অ্যারেস্ট করার দাবিতে বুয়েট কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন ডিএসডব্লিউ ভবনের (ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর) সামনে জড়ো হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা "ধর্ষকের ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না; ধর্ষকদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন; বিচার বিচার বিচার চাই, ধর্ষকের বিচার চাই"সহ নানান স্লোগান দেয়।

অভিযুক্ত শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে বুয়েট ২১ ব্যাচের প্রকাশিত ধর্ষণ ও প্রমাণের মিলসমূহ:

১) "রেডডিট ব্যবহারকারী নিজেকে “বুয়েট ইইই-২১”-এর শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

২) একাধিক মন্তব্যে সে বাসইউস ব্র্যান্ডের এয়ারবাডস ব্যবহার করেন বলে উল্লেখ করেছেন — যা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর সঙ্গেও মেলে।

৩) রেডডিট আইডি থেকে জানা যায়, সে জুন মাসে মুুসটাং,নেপাল সফর করেছেন — একই সময়ে (৩ জুন) শ্রীশান্ত রায় তার ব্যক্তিগত সোশ্যাল মিডিয়ায় মুসটাং থেকে ছবি পোস্ট করেছেন।

৪) উক্ত রেডডিট আইডির অশালীন মন্তব্যগুলির ভাষা, টোন ও লেখনশৈলী বহু সহপাঠী শনাক্ত করেছেন, যা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর স্বভাবগত লেখনভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

৫) যখন বুয়েট শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি-বর্জনের পক্ষে সম্মিলিত স্বাক্ষর প্রদান করেন, তখন একমাত্র সেই কাগজে স্বাক্ষর করেননি — যা তার দৃষ্টিভঙ্গি ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে।"

"উল্লিখিত প্রমাণ ও মিলের ভিত্তিতে আমরা দৃঢ়ভাবে সন্দেহ করছি যে আমাদের ব্যাচের শ্রীশান্ত রায়ই উক্ত রেডডিট আইডির ব্যবহারকারী এবং সে-ই সচেতনভাবে নারীদের প্রতি অশালীন, লাঞ্ছনাকর ও হয়রানিমূলক আচরণ করেছেন।"

এছাড়াও, "যদি ওর কাছ থেকে আগেও এরকম কোনো আচরণের শিকার হয়ে থাকে বা কোনো প্রমাণ থেকে থাকে, সে যেন গোপনীয়তা বজায় রেখে হলেও সেটা প্রকাশ্যে আনে।"

পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ জারি করেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "এতদ্বারা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের '২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায় (আইডিঃ ২১০৬১৬৯)-এর ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করা হলো।"

এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি স্থায়ী বহিষ্কার-এর বিষয়ে আগামীকাল বুয়েট উপাচার্যের সাথে আলোচনা হবেন বলে জানান তিনি।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্যান্য সংবাদ