ঢাকা, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২

রিজার্ভ কেলেঙ্কারিতে সাবেক তিন গভর্নরসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

২০২৫ অক্টোবর ০৫ ০৭:০১:২২

রিজার্ভ কেলেঙ্কারিতে সাবেক তিন গভর্নরসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটি ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক ১৭ কর্মকর্তা এবং ভারতীয় দুই নাগরিকসহ মোট ১৯ জনের তথ্য চেয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে। এতে তাদের পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, দায়িত্বের পরিধি ও অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

এদের অনেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়িত্বে গাফিলতি ও নীতি শিথিলতার সুযোগে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের নজরদারিতে রয়েছেন।

তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর—ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। রিজার্ভ চুরির সময় দায়িত্বে ছিলেন আতিউর রহমান, যিনি ওই বছরের ১৫ মার্চ পদত্যাগে বাধ্য হন। এ ছাড়া সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, আবু হেনা মো. রাজী হাসান, এস এম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের ও আহমেদ জামাল—তাদের বিষয়েও তথ্য চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহার নামও তালিকায় রয়েছে।

বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক ও আইসিটি বিভাগের দেবদুলাল রায়। মেজবাউল হক সম্প্রতি এক মাসের নোটিশে পদত্যাগ করেছেন। তালিকায় আরও রয়েছেন কমন সার্ভিস বিভাগ-২-এর পরিচালক মো. তফাজ্জল হোসেন, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, এবং আইসিটি বিভাগের মসিউজ্জামান খান ও রাহাত উদ্দিন। চিঠিতে মসিউজ্জামান খানের নাম দুইবার এসেছে—একবার অতিরিক্ত পরিচালক, আরেকবার উপপরিচালক হিসেবে। দুদকের মতে, দুজনই একই ব্যক্তি। তাদের মধ্যে মাসুম বিল্লাহ ছাড়া সবাই রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা–সংশ্লিষ্ট বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিউইয়র্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া দুই কোটি ডলার ফেরত পাওয়া যায়, আর ফিলিপাইনে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে দেড় কোটি ডলার ফেরত আসে ২০১৬ সালের নভেম্বরে। এখনো ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধারে ফিলিপাইনে ১২টি মামলা চলমান। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত চারটি বিভাগ হলো—ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম ও অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং।

দুদকের চিঠিতে ভারতীয় নাগরিক নীলা ভান্নান ও রাকেশ আস্তানা–এর তথ্যও তলব করা হয়েছে। নীলা ভান্নান রিজার্ভ চুরির আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য তিনটি ব্যাংকের সুইফট সংযোগ স্থাপনের কাজ করেছিলেন। আর চুরির পর সাইবার নিরাপত্তা তদন্তে সহায়তার জন্য রিজার্ভ চুরির সময়ের গভর্নর ড. আতিউর রহমান নিয়োগ দেন রাকেশ আস্তানাকে, যিনি ফায়ারওয়াল ভেদ করে কীভাবে অর্থ স্থানান্তর হলো তা অনুসন্ধান করছিলেন।

এএসএম/

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত