ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে পা রাখছে শেয়ারবাজারের আরেক ব্যাংক

মোবারক হোসেন
সিনিয়র রিপোর্টার

মোবারক হোসেন: প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে শেয়ারবাজারের আরেক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স (এনসিসি) ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও প্রাথমিকভাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। বর্তমানে সম্ভাব্যতা যাচাই বা ফিজিবিলিটি রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে, যা শিগগিরই জমা দেওয়া হবে।
সবশেষ ২০২১ সালে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে রূপান্তরিত হয়েছিল। তবে এর পর আর কোনো প্রচলিত ব্যাংক পূর্ণাঙ্গভাবে এ ধারায় আসেনি। এমন সময়ে যখন বেশ কিছু ইসলামিক ব্যাংক আর্থিক সংকটে পড়েছে, তখন প্রচলিত ধারার ব্যাংকটি ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে প্রবেশে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এনসিসি ব্যাংকের পাশাপাশি নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি ব্যাংক (এনআরবি) এবং বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকও ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে রূপান্তরের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যদিও প্রতিষ্ঠান দুটি এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো পরিকল্পনা জমা দেয়নি। এদিকে পূবালী ব্যাংক এবং ব্যাংক অব সিলন শুধু ইসলামিক শাখা বা উপশাখা খোলার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে।
বর্তমানে দেশে ১০টি ইসলামিক ব্যাংক কার্যক্রম চালাচ্ছে। এগুলো হলো—ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ্, এক্সিম, শাহ্জালাল, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, আইসিবি ইসলামিক এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। গত সরকারের সময় ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ছাড়া বেশিরভাগ ব্যাংক অনিয়ম ও সঙ্কটে জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে পাঁচটি ব্যাংক ইতোমধ্যে একীভূত হয়েছে। এখন ইসলামী ব্যাংক ও আল-আরাফাহ্ ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, অনিয়ম ও অস্থিরতার কারণে ইসলামিক ব্যাংকিং খাতে মানুষের আস্থা কিছুটা কমে গিয়েছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে। ফলে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে মানুষের আগ্রহ আবার বাড়ছে। এ সুযোগ ধরতে প্রচলিত ব্যাংকগুলো আগ্রহ দেখাচ্ছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের বাজারে ভালো সুনাম আছে, তাদের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখছে।
এনসিসি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছেন। পাশাপাশি একটি পরিকল্পনাও উপস্থাপন করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের কিছু শর্ত দিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো ফিজিবিলিটি রিপোর্ট। ব্যাংকের সম্পদ ও টেকসই অবস্থান যাচাই করেই এ রিপোর্ট তৈরি হবে। কাজ শেষ হলে নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রচলিত ব্যাংকগুলো ৪১টি ইসলামিক শাখা এবং ৯১৯টি ইসলামিক উইন্ডো পরিচালনা করছে। এর মধ্যে এনসিসি ব্যাংকের রয়েছে দুটি শাখা ও ৩২টি উইন্ডো। পূবালী ব্যাংকের রয়েছে আটটি শাখা ও ২২টি উইন্ডো, সম্প্রতি তারা আরও ৮৭টি শাখার জন্য আবেদন করেছে, যার মধ্যে আটটির অনুমোদন মিলেছে। অন্যদিকে এনআরবি ব্যাংকের একটি ইসলামিক শাখা এবং ২৭টি উইন্ডো রয়েছে। বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের দুটি ইসলামিক শাখা আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, জুলাই শেষে ইসলামিক ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৫৪ হাজার সাত কোটি টাকা এবং বিনিয়োগের পরিমাণ পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে ইসলামিক ব্যাংকের মোট শাখা সংখ্যা ১ হাজার ৭৩৯টি।
এএসএম/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান,সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে শেয়ারবাজারের ৮ কোম্পানি
- দুই বছরের ডিভিডেন্ড পেল তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৬ কোম্পানি
- বিএসইসি-ডিএসই’র নাকের ডগায় লোকসানি শেয়ার নিয়ে কারসাজি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইবনে সিনা ফার্মা
- চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- দু্ই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- নয় কোম্পানির শেয়ারে মুভিং এভারেজ,ম্যাকডি, এঙ্গালফিং বাই সিগনাল
- শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থনীতির দুই শীর্ষ নেতার কড়া সমালোচনা
- ১৪ প্রতিষ্ঠান রদবদলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা অন্ধকারে, বাড়ছে আতঙ্ক
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ কোম্পানিতে
- মুনাফা কমেছে জুতাশিল্পের দুই জায়ান্টের