ঢাকা, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২
শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থনীতির দুই শীর্ষ নেতার কড়া সমালোচনা

আবু তাহের নয়ন
সিনিয়র রিপোর্টার

আবু তাহের নয়ন:
ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রিজওয়ানুর রহমান তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, বাংলাদেশই সম্ভবত "একমাত্র দেশ যেখানে পুঁজি সংগ্রহে শেয়ারবাজারের কোনো ভূমিকা নেই।" তিনি এই পরিস্থিতির জন্য বর্তমান ও অতীতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তাদের দায়ী করেন এবং অভিযোগ করেন, তারা আইন প্রয়োগ করতে বা বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ (পিআরআই) এবং অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড (ডিএফএটি) আয়োজিত মাসিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক অন্তর্দৃষ্টি (এমএমআই) সেমিনারে এই মন্তব্য করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, বর্তমান পরিবেশে মৌলিকভাবে শক্তিশালী কোনো কোম্পানিই তালিকাভুক্তির জন্য বাজারে আসবে না। তিনি শেয়ারবাজারের আরও নানা বিষয় ও অসঙ্গতি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, এই সমস্যার আংশিক কারণ হিসেবে ১৯৯২ সালের একটি সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন। ওই সিদ্ধান্তে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তিনি এই পদক্ষেপটিকে "আত্মঘাতী" বলে মন্তব্য করেন, যা শেয়ারবাজারের বিকাশকে রুদ্ধ করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর জোর দিয়ে বলেন, ব্যাংক নির্ভরতা কমানো না গেলে এখাতের উন্নয়ন অধরাই থেকে যাবে। ফরাসউদ্দিন আরও যোগ করেন, যেখানে ব্যাংক পরিচালকদের ভূমিকা হলো নীতি নির্ধারণ করা, সেখানে বাংলাদেশে তারা সরাসরি ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত থাকেন। তিনি দাবি করেন, "আমাদের অবশ্যই ব্যাংকের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনাকে আলাদা করতে হবে।"
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ব্যবসার পুঁজি সংগ্রহে শেয়ারবাজারের অবদান ১ শতাংশের কম। গত ১৬ বছরে প্রায় ১৫০টি আইপিও-এর মাধ্যমে মাত্র ১১ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে—যা ব্র্যাক ব্যাংকের বার্ষিক ঋণ বৃদ্ধি (প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা)-এর কাছাকাছি। ২০১০ সালে জিডিপি-এর প্রায় ৪০ শতাংশ থাকা বাজার মূলধন বর্তমানে সংকুচিত হয়ে ৭.২ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ, শ্রীলঙ্কা ২২ শতাংশে পৌঁছেছে এবং ভারতের বাজার তাদের অর্থনীতির আকারকেও ছাড়িয়ে গেছে।
তবে এই নিম্নমুখী প্রবণতাকে বিপরীতমুখী করার প্রচেষ্টা চলছে। বিএসইসি-এর একটি টাস্কফোর্স গত এপ্রিল মাসে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি টার্নওভার থাকা বহুজাতিক ও বড় ফার্মগুলোর জন্য সরাসরি তালিকাভুক্তির সুপারিশ করেছে। একইসঙ্গে, যে সকল কর্পোরেশনের ঋণের পরিমাণ এই সীমা অতিক্রম করেছে, তাদের জন্য বাধ্যতামূলক তালিকাভুক্তির সুপারিশও করা হয়েছে।
এএসএম/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান,সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- নতুন দিগন্তে বেক্সিমকো, শেয়ারবাজারে আশার আলো
- দুই বছরের ডিভিডেন্ড পেল তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- বিএসইসি-ডিএসই’র নাকের ডগায় লোকসানি শেয়ার নিয়ে কারসাজি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৬ কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইবনে সিনা ফার্মা
- চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- দু্ই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- ১৪ প্রতিষ্ঠান রদবদলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা অন্ধকারে, বাড়ছে আতঙ্ক
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থনীতির দুই শীর্ষ নেতার কড়া সমালোচনা
- মুনাফা কমেছে জুতাশিল্পের দুই জায়ান্টের
- উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ কোম্পানিতে
- আর্থিক চাপ কাটাতে ভবন বিক্রি করছে শেয়ারবাজারের দুই প্রতিষ্ঠান
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে এনভয় টেক্সটাইল