ঢাকা, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২
১৪ প্রতিষ্ঠান রদবদলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা অন্ধকারে, বাড়ছে আতঙ্ক

আবু তাহের নয়ন: দেশের আর্থিক খাতে বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আওতায় শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিনের সমস্যাগ্রস্ত ৯টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফলে মোট ১৪টি প্রতিষ্ঠানের এই রদবদল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের বড় অংশই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত, যেখানে হাজারো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর অর্থ আটকে আছে।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষাকারী সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) সম্পূর্ণ পাশ কাটানো হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের কাছে কোনো বার্তা না যাওয়ায় শেয়ারবাজারে টানা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্রায় দুই মাস ধরে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) ব্যাংক একীভূতকরণের জন্য আট সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তাতে বিএসইসির কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। অথচ তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে বাজারে প্রভাব পড়ে। তবুও স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে এখনো এ বিষয়ে কোনো সরকারি ঘোষণা নেই। ফলে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে না কোম্পানিগুলো।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের অন্ধকারে রেখে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা রক্ষায় এ ধরনের প্রক্রিয়ায় বিএসইসিকে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। বিশেষ করে তালিকাভুক্ত ব্যাংক বা এনবিএফআই একীভূত বা বন্ধ হলে বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা ব্যবস্থা আগেভাগেই জানানো দরকার ছিল।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্যাংক একীভূতকরণ স্পর্শকাতর বিষয়। বিনিয়োগকারীদের অন্ধকারে রাখা ঠিক হয়নি। তাদের স্বার্থে স্টক এক্সচেঞ্জকেই এগিয়ে আসা উচিত ছিল, কিন্তু সেটাও হয়নি।’
বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য বলছে, প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। ব্যাংকটির মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, ধাপে ধাপে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বসা হবে। অন্যদিকে বিএসইসির মুখপাত্র আবুল কালাম জানিয়েছেন, বিষয়টি যখন তাদের কাছে আসবে, তখন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিনিয়োগকারীদের অর্থ যেখানে আটকে আছে, সেখানে শুরু থেকেই তাদের প্রতিনিধি রাখতে হবে। নইলে একীভূতকরণ ও বন্ধের সিদ্ধান্ত বাজারে আস্থাহীনতা বাড়াবে এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এএসএম/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান,সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- নতুন দিগন্তে বেক্সিমকো, শেয়ারবাজারে আশার আলো
- দুই বছরের ডিভিডেন্ড পেল তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- বিএসইসি-ডিএসই’র নাকের ডগায় লোকসানি শেয়ার নিয়ে কারসাজি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৬ কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইবনে সিনা ফার্মা
- চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- দু্ই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে শেয়ারবাজারের ৮ কোম্পানি
- ১৪ প্রতিষ্ঠান রদবদলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা অন্ধকারে, বাড়ছে আতঙ্ক
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থনীতির দুই শীর্ষ নেতার কড়া সমালোচনা
- মুনাফা কমেছে জুতাশিল্পের দুই জায়ান্টের
- উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ কোম্পানিতে
- আর্থিক চাপ কাটাতে ভবন বিক্রি করছে শেয়ারবাজারের দুই প্রতিষ্ঠান