ঢাকা, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২

তিন দিনে বিনিয়োগকারীদের মূলধন ফিরেছে ১,৬১৪ কোটি টাকা

মোবারক হোসেন
মোবারক হোসেন

সিনিয়র রিপোর্টার

২০২৫ অক্টোবর ০১ ২১:৫০:৫৪

তিন দিনে বিনিয়োগকারীদের মূলধন ফিরেছে ১,৬১৪ কোটি টাকা

মোবারক হোসেন: শেয়ারবাজারে চলতি সপ্তাহে কার্যদিবস ছিল মাত্র তিনটি। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বুধবার ও বৃহস্পতিবার লেনদেন বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবার—এই তিন দিনে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে দুদিন বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল, যা বিনিয়োগকারীদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।

তিন কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ও বাজার মূলধনে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। এ সময়ে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৬১৪ কোটি টাকার বেশি। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ছুটির আগে বাজারে এমন ইতিবাচক ধারা থাকা ভবিষ্যতের জন্য শুভ লক্ষণ।

বাজার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে। তিন কার্যদিবস শেষে এটি ১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪১৬ পয়েন্টে। তবে বাছাই করা ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক এই সময়ে ২১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮২ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে সূচকটির অবস্থান ছিল ২ হাজার ১০৩ পয়েন্টে। অন্যদিকে, শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) সপ্তাহজুড়ে অপরিবর্তিত থেকে ১ হাজার ১৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

লেনদেনের দিক থেকেও তিন কার্যদিবসে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। আলোচ্য সময়ে ডিএসইতে গড় লেনদেন বেড়েছে ৬.২৩ শতাংশ। প্রতিদিনের গড় লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৬২০ কোটি ১১ লাখ টাকা, যা গত সপ্তাহের গড় ৫৮৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকার তুলনায় বেশি। তবে সার্বিকভাবে তিন দিনে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৬০ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকার। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে প্রায় ১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন-

ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে শেয়ারবাজারের ৮ কোম্পানি

যদিও লেনদেন কমেছে, বাজার মূলধনে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে। তিন কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ১ হাজার ৬১৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি ১৭ লাখ টাকায়। গত সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

তবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) চিত্র ভিন্ন। সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইর সবগুলো সূচক কমেছে। প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭৯ পয়েন্টে এবং সিএসসিএক্স সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৬৪ পয়েন্টে। একই সঙ্গে এক্সচেঞ্জটিতে অংশ নেওয়া অধিকাংশ সিকিউরিটির দরও কমেছে।

তথ্য অনুযায়ী, সিএসইতে গত তিন কার্যদিবসে মোট ২৯৩টি সিকিউরিটির লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৩টির, কমেছে ১৫৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে মাত্র ২১টির দর। এ সময়ে সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি টাকা, যেখানে আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৮০ কোটি ৩ লাখ টাকার।

সার্বিকভাবে বলা যায়, ঢাকার বাজার তুলনামূলক স্থিতিশীল ও কিছুটা ইতিবাচক থাকলেও চট্টগ্রামের বাজারে চাপ বজায় রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উৎসব-পরবর্তী সময়ে বাজারে নতুন উদ্দীপনা ফিরতে পারে। তবে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, নীতিগত স্থিতিশীলতা ও প্রাতিষ্ঠানিক আগ্রহ বাড়লে বাজার আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত