ঢাকা, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
জুলাই অভ্যুত্থান: আবেগ, সংগ্রাম ও জাতির ঐক্যের প্রতীক

জুলাই অভ্যুত্থান—শুধু একটি তারিখ নয়, একটি অধ্যায়। এটি আমাদের তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ের গভীরে জাগ্রত এক চিরন্তন আবেগের নাম। যেভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির গর্বের প্রতীক, তেমনই এই অভ্যুত্থান আমাদের জন্য আত্মত্যাগ, সাহস, এবং সংগ্রামের এক উজ্জ্বল ইতিহাস। আমরা এই স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই, বেঁচে থাকতে হবে, ইনশাআল্লাহ।
এই অভ্যুত্থান আমাদের জন্য ঠিক কতখানি আবেগের, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এটি অনুভব করতে হয়, উপলব্ধি করতে হয়। এর সবচেয়ে উজ্জ্বল উদাহরণ ছিল গত ০৪/০১/২৫ তারিখে বিজয় একাত্তর হলে আয়োজিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী। পুরো হলরুম যেন এক গভীর আবেগের সাগরে নিমজ্জিত ছিল।
ডকুমেন্টারি চলাকালীন হলের পরিবেশ ছিল শান্ত, কিন্তু সেই নীরবতার মাঝেও কান্নার ফিসফিসানি শোনা যাচ্ছিল। এটি কোনো সাধারণ কান্না নয়, বরং এক অসীম ভালোবাসা, হার না মানা সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা, এবং এক ঐতিহাসিক সত্যের অনুভূতি। সেই মুহূর্তে আমার মনে হলো—এই অভ্যুত্থান কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, এটি চিরস্থায়ী। এই বিপ্লবের চেতনা যুগ যুগ ধরে আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে আলো ছড়াবে, ইনশাআল্লাহ।
ডকুমেন্টারির মূল আকর্ষণ ছিল কোটা আন্দোলন থেকে শুরু করে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিক ছবি। বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আন্দোলন ও দমন-পীড়নের করুণ চিত্র অত্যন্ত আন্তরিকভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। দর্শকদের হৃদয় যেন সেই ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গিয়েছিল।
ডকুমেন্টারির শেষ পর্যায়ে দেখানো হয় আসিফ মাহমুদ ভাইয়ের নেতৃত্বে ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক 'লং মার্চ টু ঢাকা' কর্মসূচির ভিডিও। তখন পুরো অডিটোরিয়াম নিঃশব্দ, সবাই মুগ্ধ হয়ে সেই সংগ্রামের চিত্র দেখছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘটে এক আবেগঘন ঘটনা। হল মসজিদের ইমাম সাহেবের সাত বছরের ছেলে হঠাৎ করেই আনন্দে হাততালি দিয়ে ওঠে। তার সেই উচ্ছ্বাস যেন সমগ্র হলঘরের নীরবতাকে ভেঙে দিয়ে বিজয়ের আনন্দের সুর তুলে ধরেছিল। তার নিষ্পাপ উল্লাস আমাদের মনে করিয়ে দিল—জুলাই অভ্যুত্থানের বিজয় কেবল জেনারেশন-জেড-এর নয়; এটি সারা বাংলার মানুষের আবেগ, ভালোবাসা, এবং আত্মত্যাগের প্রতীক।
জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে অন্যায়কে প্রতিরোধ করতে হয়, কীভাবে সাহসকে আলিঙ্গন করতে হয়। এটি কেবল ইতিহাস নয়, এটি জাতির ঐক্যের এক অমলিন প্রতিচ্ছবি। এই চেতনা বেঁচে থাকবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। ইনশাআল্লাহ, এই বিজয়ের দীপ্ত আলো কখনো ম্লান হবে না।
(কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙাবন্দীশালায় ঐ শিকল ভাঙাতারা কি ফিরিবে আরতারা কি ফিরিবে এই সুপ্রভাতেযত তরুণ অরুণ গেছে অস্তাচলে।এসো স্বদেশব্রতের সহদীক্ষালোভীসেই মৃত্যুঞ্জয়ীদের চরণচুমি।যারা জীর্ণজাতির বুকে জাগালো আশামৌন মলিন মুখে জাগালো ভাষাআজি রক্তকমলে গাঁথা মাল্যখানিবিজয়লক্ষ্মী দেবে তাঁদেরি গলে।)
এমাদ উদ্দিন
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বিভাগ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারের পাঁচ কোম্পানিতে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ
- নভেম্বর-ডিসেম্বরে হতে পারে ঢাবির ৫৪তম সমাবর্তন
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে তিন কোম্পানি
- ঢাবি অ্যালামনাইয়ের বৃত্তির সাক্ষাৎকার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- ভারতের ২৫০ সেনা নিহত
- ১৭ কোম্পানি শেয়ারে সফল বিনিয়োগ, ২০ শতাংশের বেশি মুনাফা
- হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে, মারা গেলেন ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী
- চ্যাটজিপিটি ব্যবহারে ভয়াবহ বিপদ, গবেষণায় উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
- শেয়ারবাজারে ব্যাংক খাতে বিক্রেতা সংকটের নতুন দিগন্ত
- ঢাবির ২০১৮-১৯ সেশনের অছাত্ররা হতে পারবেন না ভোটার-প্রার্থী
- শিক্ষার্থীদের আলোকিত ভবিষ্যত গড়তে পাশে থাকবে ঢাবি অ্যালামনাই
- তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরা ভাইরাল ছবি নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য
- কারো বাবা শেষ সম্বল বিক্রি করেছেন, কারো বাবাই নেই
- শিক্ষার্থীদের জন্য সবসময় ডুয়ার অফিস খোলা : শামসুজ্জামান দুদু
- শোক সংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন পলক