ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
সত্যকে ধামাচাপা দিয়ে যু'দ্ধ-উন্মাদনা সৃষ্টি করছে ভারত!

ডুয়া ডেস্ক: কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ঘটনার পর যখন দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা নতুন করে তীব্র হচ্ছে, তখন ভারত সরকার এমন একটি কৌশল গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে জনগণের কাছে পাকিস্তানের ভিন্নমত প্রচার ঠেকানো যাচ্ছে। অনেকেই এটিকে ‘তথ্য যুদ্ধ’ হিসেবে দেখছেন।
মূলত, গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) নয়াদিল্লি কর্তৃপক্ষ ১৬টি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করেছে। নিষিদ্ধ হওয়া চ্যানেলগুলোর মধ্যে ডন নিউজ, এআরওয়াই নিউজ ও জিও নিউজের মতো পাকিস্তানের জনপ্রিয় মূলধারার গণমাধ্যমও রয়েছে।
এতেই শেষ নয়, ভারত সরকার কিছু ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ক্রিকেট বিশ্লেষকের অ্যাকাউন্টও ব্লক করেছে। সরকারের দাবি, এসব প্ল্যাটফর্ম ‘উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িকভাবে সংবেদনশীল’ কনটেন্ট ছড়াচ্ছিল।
তবে বহু বিশ্লেষকের মতে, এই অজুহাতগুলো হাস্যকর। তারা বলছেন, যখন ভারতের অনেক মূলধারার গণমাধ্যমে নিয়মিতভাবে পাকিস্তান ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচার চালানো হচ্ছে, তখন এমন নিষেধাজ্ঞা দ্বিমুখী নীতির স্পষ্ট উদাহরণ।
এছাড়াও ভারত সরকার আরও কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলো ব্লক করা এবং পাকিস্তানের সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার প্রতি বয়কট নীতি চালু ইত্যাদি। এসব পদক্ষেপ দেখে অনেকে বলছেন, ‘যেন ভারত সরকার, কিছু গণমাধ্যম ও অংশবিশেষের নাগরিক সমাজ যুদ্ধকালীন মানসিকতা তৈরি করতে চাইছে।’
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে পরিচিত একটি রাষ্ট্র যদি পাকিস্তানি গণমাধ্যমের ভিন্নমত প্রকাশকে ভয় পায়, তাহলে তা থেকেই বোঝা যায় পরিস্থিতি কতটা সংবেদনশীল।
নিঃসন্দেহে পাকিস্তানেও যুদ্ধপ্রবণ কিছু কণ্ঠস্বর রয়েছে। তবে ভারতের গণমাধ্যমের ব্যাপক প্রভাব ও বিস্তৃত নাগালের কারণে যুদ্ধ-উন্মাদনা যুদ্ধ-উন্মাদনা সহজেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গত মঙ্গলবারের কাশ্মীরে পেহেলগামে হামলার এক সপ্তাহ পার হলেও এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের জড়িত থাকার নির্ভরযোগ্য প্রমাণ ভারত পেশ করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি গণমাধ্যমকে চুপ করিয়ে দেওয়ার পেছনে আসল উদ্দেশ্য হতে পারে— জনসাধারণ যাতে প্রশ্ন না তোলে বা বিকল্প মতামত না জানতে পারে।
এদিকে হামলার পর থেকেই কাশ্মিরি মুসলমানদের ওপর প্রতিশোধপরায়ণ হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে, প্রায় ২ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি পেহেলগাম ঘটনার অজুহাতে ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধেও ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে।
এই সবকিছু বর্তমান পরিস্থিতিকে এক ধরনের 'তথ্য যুদ্ধ'-এর রূপ দিচ্ছে— যেখানে সত্যকে আড়াল করে উসকানিমূলক বক্তব্য ও ঘৃণার রাজনীতাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
এখনই সময়, ভারত রাষ্ট্র ও এর গণমাধ্যমগুলোর আত্মসমালোচনায় ফিরে আসা এবং শান্তিপূর্ণ, যুক্তিভিত্তিক অবস্থান গ্রহণ করার। কারণ, যখন তথ্য নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন কেবল মতপ্রকাশের স্বাধীনতাই হুমকির মুখে পড়ে না— শান্তি, সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধও বিপন্ন হয়ে পড়ে।পাকিস্তানী ডন পত্রিকার সম্পাদকীয়
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিও হিসাবে ৫ লাখ টাকা নগদ জমা ও উত্তোলনের কথা ভাবছে বিএসইসি
- সরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ, তালিকায় ২১ প্রতিষ্ঠান
- ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন বাতিল করল বিএসইসি
- বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুললেন অর্থ উপদেষ্টা
- ‘এলাম পরামর্শ নিতে, পেলাম পদত্যাগের বার্তা’- বিএসইসি চেয়ারম্যানের ক্ষোভ
- মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও পাবলিক রুলস ইস্যুতে টাস্কফোর্সের চূড়ান্ত সুপারিশ
- দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের
- দুর্বল ৬ শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরও বেড়েছে
- ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংক এমডিবিহীন, নেতৃত্ব সংকট তীব্র
- ঢাকা অচলের ঘোষণা
- তিন কোম্পানির বোনাস ডিভিডেন্ডে বিএসইসির সম্মতি
- লোকসান থেকে মুনাফায় বস্ত্র খাতের চার কোম্পানি
- নানামুখী চেষ্টার পরও ভেঙে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারে ৬১৭টি বিও হিসাব স্থগিত