ঢাকা, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২

শেয়ারবাজারে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার নতুন তদন্তে বিএসইসি

২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৫:১৭:৩২

শেয়ারবাজারে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার নতুন তদন্তে বিএসইসি

হাসান মাহমুদ ফারাবী: দেশের শেয়ারবাজারে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির মাধ্যমে প্রায় ৬ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকার বিনিয়োগের তথ্য হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। অভিযোগ রয়েছে, এসব বিনিয়োগ ব্যাংক থেকে অনিয়মিত ঋণ নিয়ে করা হয়েছে। বিনিয়োগের টাকা দিয়ে শেয়ারমূল্য কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধি করে কারসাজি করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

বিএফআইইউ তাদের অনুসন্ধানের তথ্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-কে পাঠিয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য বিএসইসি চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং বাজারে শৃঙ্খলা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।

তদন্তে দেখা গেছে, ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে এবং অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ নেওয়া হয়েছে। এরপর সেই ঋণের অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা হিসাবগুলোতে জমা হয় এবং তা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা হয়। ব্যাংকিং এবং ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে এ ধরনের কৌশল চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব ঋণ এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। এর পাশাপাশি শেয়ারবাজার থেকে আজীবনের জন্য পারসনা নন গ্রাটা (অবাঞ্ছিত) ঘোষণা করা হয়েছে।

তদন্তে চিহ্নিত আটটি প্রতিষ্ঠান হলো: অ্যাবসলুট কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাপোলো ট্রেডিং, বেক্সিমকো হোল্ডিংস, জুপিটার বিজনেস, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ, ক্রিসেন্ট, ট্রেডনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল এবং সেন্ট্রাল ল্যান্ড অ্যান্ড বিল্ডিং। এই প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ এবং পরিচালনা পর্ষদে প্রভাব বিস্তারে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

তদন্তে দেখা গেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শেয়ার কারসাজি এবং কৃত্রিম মূল্য বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়া গেছে। শেয়ার কারসাজিতে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে মোট ৪২৮ কোটি টাকার জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাপোলো ট্রেডিং, জুপিটার বিজনেস, ক্রিসেন্ট এবং ট্রেডনেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে আলাদাভাবে জরিমানা করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিএসইসির এক কর্মকর্তা জানান, জরিমানা আরোপের পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছে। পাশাপাশি, কিছু প্রতিষ্ঠান আদালতে রিট দায়ের করে স্থিতাবস্থা আদায় করেছে। ফলে জরিমানার অর্থ আদায়ের প্রক্রিয়া বর্তমানে স্থগিত বা বিলম্বিত হয়ে পড়েছে।

এদিকে, বেক্সিমকো গ্রুপের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিনিয়োগসংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম আগে সরাসরি গ্রুপের প্রধান ব্যক্তি নিজেই তদারকি করতেন। সরকারের পরিবর্তনের পর থেকে এসব শেয়ার ও বন্ড বিক্রি করতে না পারায় গ্রুপের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এখন তীব্র পুঁজিসঙ্কটে পড়েছে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

আজকের মুদ্রার বিনিময় হার (১১ অক্টোবর)

আজকের মুদ্রার বিনিময় হার (১১ অক্টোবর)

ডুয়া ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনও দিনদিন বেড়ে চলেছে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে সুষ্ঠু রাখতে এবং মুদ্রা... বিস্তারিত