ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

শেয়ারবাজারের কোম্পানিতে কারসাজির গন্ধ! তদন্তে নেমেছে বিএসইসি

২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৯:২৯:৪২

শেয়ারবাজারের কোম্পানিতে কারসাজির গন্ধ! তদন্তে নেমেছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কেঅ্যান্ডকিউ বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারে অস্বাভাবিক উত্থান ও লেনদেনের উল্লম্ফনের ঘটনায় তদন্তে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারটির দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় বাজারে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও উত্তেজনা। এই কৃত্রিম উত্থানকে ঘিরে ফের প্রশ্ন উঠছে—বাজারে কারসাজির চক্র কি আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে?

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসির সহকারী পরিচালক লামিয়া আক্তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রধান শেয়রবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কোম্পানিটির শেয়ারে কারসাজির বিষয় তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে কেঅ্যান্ডকিউ শেয়ারের অস্বাভাবিক লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন বিএসইসির কাছে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দিতেও বলা হয়েছে।

বাজারের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৫ জুন কেঅ্যান্ডকিউ’র শেয়ারদর ছিল ১৯০ টাকা ৭০ পয়সা। তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে রবিবার (০৬ অক্টোবর) শেয়ারটির দাম দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে দাঁড়িয়েছেয় ৪৫০ টাকা ৯০ পয়সায়। আজ সোমবার (০৭ অক্টোবর) দর কিছুটা কমে ৪৪২ টাকা ৫০ পয়সায় অবস্থান করছে।

বিএসইসি জানিয়েছে, এই অস্বাভাবিক গতিবিধি ‘সন্দেহজনক’ এবং এতে ‘কৃত্রিম চাহিদা’ সৃষ্টির ইঙ্গিত রয়েছে। সংস্থার মতে, এ ধরনের আচরণ বাজারের স্বচ্ছতা ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করে। ইতিমধ্যে স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধিদের সতর্ক করা হয়েছে, যেন কেউ ম্যানিপুলেটিভ লেনদেনে জড়িত না থাকে।

বিএসইসি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এমন সন্দেহজনক লেনদেন গুরুতর বিধিভঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি সিকিউরিটিজ আইনের দ্বিতীয় তফসিলের আচরণবিধি ৬ ও ৮ (যা কৃত্রিম লেনদেন ও জালিয়াতি নিষিদ্ধ করে) এবং সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০-এর বিধি ১১ (যা ন্যায্য ব্যবসা আচরণ নির্ধারণ করে) -এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আইন ভঙ্গের কঠোর সতর্কবার্তার পর বাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি পুরো শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক সংকেত দেবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি বিএসইসি সময়মতো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের কারসাজি এবং অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। ফলে বাজার হবে আরও স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য ও সুরক্ষিত।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত