ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২
সাইবার নিরাপত্তা: ডিজিটাল যুগের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ

ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতি মানুষের জীবনকে বদলে দিয়েছে দ্রুততম গতিতে। এখন ব্যাংকিং লেনদেন, কেনাকাটা, শিক্ষালাভ, চাকরির আবেদন কিংবা সরকারি নানা সেবা সবই সম্ভব হচ্ছে মাত্র কয়েক ক্লিকের মাধ্যমে। ঘরে বসেই মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং করছে, অনলাইন শপিং করছে, এমনকি স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে কৃষি পরামর্শ পর্যন্ত পাচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে। এই পরিবর্তন আমাদের জীবনকে যেমন সহজ করেছে, তেমনি এনেছে এক নতুন ঝুঁকিও সাইবার অপরাধ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তির ইতিবাচক দিক যত দ্রুত বিস্তার লাভ করছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধীদের কৌশলও। এখন আর ডাকাতি বা ছিনতাইয়ের জন্য অস্ত্র হাতে নামতে হয় না, বরং একজন দক্ষ হ্যাকার ঘরে বসেই কয়েক মিনিটের মধ্যে লাখো টাকার ক্ষতি করতে সক্ষম। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি, মোবাইল ওয়ালেট হ্যাক, ফেসবুক বা ইমেইল একাউন্ট দখল, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করা সবই আজকাল প্রতিদিনকার ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়েই নয়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও সাইবার হামলা এক বড় হুমকি হয়ে উঠছে। বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো যেমন বিমানবন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র, সরকারি ওয়েবসাইট বা সামরিক তথ্যভান্ডারে নিয়মিত হামলার চেষ্টা চালাচ্ছে হ্যাকার চক্র। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় বড় কোম্পানি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ডেটা চুরি হয়ে গেছে, যার আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আমাদের দেশের ব্যাংকিং খাত, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এবং এমনকি ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীর তথ্যও সাইবার অপরাধীদের টার্গেটে রয়েছে। তাই সাইবার নিরাপত্তা এখন আর কেবল প্রযুক্তিগত বিষয় নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাইবার ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞরা কিছু সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। যেমন—
১) নিয়মিত সফটওয়্যার ও সিকিউরিটি সিস্টেম আপডেট করা,
২) জটিল ও শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা,
৩) দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা (Two-Factor Authentication) চালু রাখা,
৪) অচেনা লিংক বা ইমেইলে ক্লিক না করা,
৫) এবং অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা।
এসব সহজ নিয়ম মানলে সাইবার ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। তবে শুধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সচেতনতা যথেষ্ট নয়। একটি নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য এখন অনেক দেশেই বিশেষজ্ঞ সাইবার নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক কোর্স চালু করা হয়েছে।
বাংলাদেশেও সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নতুন কোর্স চালু করা, তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া—এসব উদ্যোগের মাধ্যমে একটি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলাই এখন প্রধান লক্ষ্য।
তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে টিকে থাকতে হলে ডিজিটাল অর্থনীতিকে নিরাপদ রাখা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আর এজন্য সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আগামী দিনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকবে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান, খেলাটি সরাসরি দেখুন (LIVE)
- বাংলাদেশে বনাম হংকং, খেলাটি সরাসরি দেখুন (LIVE)
- বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, খেলাটি সরাসরি দেখুন (LIVE)
- বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল শেয়ারবাজারের খেতাব পেল বাংলাদেশ!
- ৪০ বছরের ইতিহাসে ডিভিডেন্ডে নজির ভাঙল এপেক্স ট্যানারি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণায় রেকর্ড ভাঙ্গল লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স!
- বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড, খেলাটি সরাসরি দেখুন (LIVE)
- শেয়ারবাজারে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার নতুন তদন্তে বিএসইসি
- একদিনে 'এ' ক্যাটাগরিতে ফিরল দুই কোম্পানি
- বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি ফেরাবে বিএসইসি’র নতুন নিয়ম
- বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান,ফ্রিতে দেখবেন যেভাবে
- মার্জিন ঋণ আতঙ্কে হঠাৎ ধস নামলো শেয়ারবাজারে!
- মার্জারের দুই ব্যাংকে ফেঁসে গেল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে তালিকাভুক্ত ৪ কোম্পানি